ঢাকা ০৪:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
অল্প সময়ের মধ্যেই দুইবার হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন তামিম, পরানো হয়েছে রিং সাকিব আল হাসানের সম্পদ জব্দের নির্দেশ পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আজ থেকে ট্রেনযাত্রা শুরু হয়েছে এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ২৩ মার্চ ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি ২৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৫ মার্চ মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করবেন আরও দুটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে ফরিদপুরে বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল

অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রতিশোধমূলক গণমামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ১১:২৩:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৪ Time View

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে গণহারে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গণগ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার মতো ভূমিকা থেকে সরে আসার পাশাপাশি প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এইচআরডব্লিউ-এর ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, পুরনো নিপীড়নমূলক ভূমিকায় ফিরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যা বাংলাদেশের জন্য সংকট ডেকে আনবে।

মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে পুলিশ আবারও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাচাই বাছাই ছাড়াই ফৌজদারি মামলা দায়ের করছে। এতে পুলিশ যেকোনো ব্যক্তিকে যেকোনো অবস্থায় হয়রানি করার অবাধ সুযোগ পাচ্ছে।

এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত গুম বিষয়ক অনুসন্ধান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‍্যাব) বিলুপ্ত করারও জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকার যে নতুন অধ্যাদেশ চালু করেছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাতে আগের আইনের মতো বেশ কিছু ক্ষতিকর ধারা-উপধারা রাখা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানায় এইচআরডব্লিউ।

এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া পরিচালক এলিন পিয়ার্স বলেছেন, “বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারকে গত ১৫ বছরের আবদ্ধ স্বৈরাচারের অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুদ্ধারের এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “অন্তবর্তী সরকারের উচিত টেকসই কাঠামোগত সংস্কারের জন্য জাতিসংঘের সমর্থন তালিকাভুক্ত করা এবং অতীতের অপব্যবহার যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নীলনকশা হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা।”

এলিন পিয়ার্স আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত এবং কাঠামোগত সংস্কার না করতে পারলে বহু প্রাণের বিনিময়ে কষ্টার্জিত এ অগ্রগতি সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যেতে পারে। একই সাথে ভবিষ্যতের সরকারকে যেকোনো দমন-পীড়নমূলক ভূমিকা নেবার পথ সহজ করে দেবে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, “অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা, বিচার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে মেরামত করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার আরও বলেছে, তারা রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইনগত পরিবর্তন আনবে, যা পরবর্তীতে নির্বাচিত সংসদ অনুমোদন দেবে।”

বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “আওয়ামী লীগের আমলে বাকস্বাধীনতাকে দমন করতে নিবর্তনমূলক আইনটি করা হলেও, অন্তবর্তী সরকার ওই আইনের পরিবর্তে একটি নতুন অধ্যাদেশ চালু করেছে। দুর্ভাগ্যবশত নতুন অধ্যাদেশে আগের আইনের মতোই অনেকগুলো ক্ষতিকারক ধারা-উপধারা রাখা হয়েছে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, “ছাত্র নেতৃত্ব ও কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্বার্থ দ্বারা বেষ্টিত। অনেকেই উদ্বিগ্ন প্রকাশ করে বলেছে, সংস্কারের গতি দৃশ্যমানভাবে কমে গেছে।”

এতে আরও বলা হয়, “ইউনূস তার প্রশাসনের বাকস্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার ওপর জোর দিয়েছেন। ”

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “নভেম্বর পর্যন্ত সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকা রাখার অভিযোগে কমপক্ষে ১৪০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া, সরকারি দপ্তরগুলোতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ১৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে। জাতীয় পতাকা অবমাননার জন্য পুলিশ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও করেছে।”

Tag :

অল্প সময়ের মধ্যেই দুইবার হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন তামিম, পরানো হয়েছে রিং

অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রতিশোধমূলক গণমামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

Update Time : ১১:২৩:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে গণহারে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গণগ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার মতো ভূমিকা থেকে সরে আসার পাশাপাশি প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এইচআরডব্লিউ-এর ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, পুরনো নিপীড়নমূলক ভূমিকায় ফিরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যা বাংলাদেশের জন্য সংকট ডেকে আনবে।

মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে পুলিশ আবারও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাচাই বাছাই ছাড়াই ফৌজদারি মামলা দায়ের করছে। এতে পুলিশ যেকোনো ব্যক্তিকে যেকোনো অবস্থায় হয়রানি করার অবাধ সুযোগ পাচ্ছে।

এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত গুম বিষয়ক অনুসন্ধান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‍্যাব) বিলুপ্ত করারও জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকার যে নতুন অধ্যাদেশ চালু করেছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাতে আগের আইনের মতো বেশ কিছু ক্ষতিকর ধারা-উপধারা রাখা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানায় এইচআরডব্লিউ।

এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া পরিচালক এলিন পিয়ার্স বলেছেন, “বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারকে গত ১৫ বছরের আবদ্ধ স্বৈরাচারের অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুদ্ধারের এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “অন্তবর্তী সরকারের উচিত টেকসই কাঠামোগত সংস্কারের জন্য জাতিসংঘের সমর্থন তালিকাভুক্ত করা এবং অতীতের অপব্যবহার যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নীলনকশা হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা।”

এলিন পিয়ার্স আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত এবং কাঠামোগত সংস্কার না করতে পারলে বহু প্রাণের বিনিময়ে কষ্টার্জিত এ অগ্রগতি সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে যেতে পারে। একই সাথে ভবিষ্যতের সরকারকে যেকোনো দমন-পীড়নমূলক ভূমিকা নেবার পথ সহজ করে দেবে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, “অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা, বিচার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে মেরামত করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার আরও বলেছে, তারা রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইনগত পরিবর্তন আনবে, যা পরবর্তীতে নির্বাচিত সংসদ অনুমোদন দেবে।”

বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “আওয়ামী লীগের আমলে বাকস্বাধীনতাকে দমন করতে নিবর্তনমূলক আইনটি করা হলেও, অন্তবর্তী সরকার ওই আইনের পরিবর্তে একটি নতুন অধ্যাদেশ চালু করেছে। দুর্ভাগ্যবশত নতুন অধ্যাদেশে আগের আইনের মতোই অনেকগুলো ক্ষতিকারক ধারা-উপধারা রাখা হয়েছে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, “ছাত্র নেতৃত্ব ও কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্বার্থ দ্বারা বেষ্টিত। অনেকেই উদ্বিগ্ন প্রকাশ করে বলেছে, সংস্কারের গতি দৃশ্যমানভাবে কমে গেছে।”

এতে আরও বলা হয়, “ইউনূস তার প্রশাসনের বাকস্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার ওপর জোর দিয়েছেন। ”

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “নভেম্বর পর্যন্ত সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকা রাখার অভিযোগে কমপক্ষে ১৪০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া, সরকারি দপ্তরগুলোতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ১৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে। জাতীয় পতাকা অবমাননার জন্য পুলিশ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও করেছে।”