অবশেষে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনের বিজয়কে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার দিনের শুরুতে ক্যাপিটল হিলে দেশের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। এ সময় সেখানে কংগ্রেসের অধিবেশনে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনুমোদন দেয়ার কথা ছিল এতে। কিন্তু ট্রাম্পের উস্কানিতে তার সমর্থকদের হামলায় প্রথম দফায় তা ভেস্তে যায়। সিনেটররা সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচান। পরে আবার অধিবেশন বসে। তাতেই বাইডেনকে দেশের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে।
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মন্টানার সিনেটর স্টিভ ডেইনস, ইন্ডিয়ানার মাইক ব্রাউন এবং জর্জিয়ার কেলি লোফ্লারসহ অন্যরা জানান, তারা আর বাইডেনের জয়ের বিষয়ে আপত্তি করবেন না। তবে কিছু রিপাবলিকান সদস্য অ্যারিজোনার ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে, যেখানে বাইডেন সামান্য ব্যবধানে জিতেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সিনেটে সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাটিক ব্লকে অনেক রিপাবলিকান সদস্য যোগ দেন; যারা বাইডেনের বিজয় মেনে নেন।
মূলত: ইউএস ক্যাপিটলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের ভয়াবহ ওই তাণ্ডবের ঘটনার পর নতুন করে বিতর্ক তৈরি থেকে বিরত থাকেন তারা। ওই সহিংসতায় এক নারীসহ অন্তত চারজন নিহত হন।
গত বুধবার ট্রাম্প সমর্থকেরা ক্যাপিটল হিলে হামলা ও ভাঙচুর চালালে প্রত্যয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু যৌথ অধিবেশন ফের শুরু করে বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় উল্টে দেওয়ার চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের পর হামলা শুরু হয়।
হামলাকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত ক্যাপিটল ভবন কার্যত দখল করে নিলে অধিবেশন মুলতবি করতে বাধ্য হয় কংগ্রেস। পুলিশের পাহারা দিয়ে আইনপ্রণেতাদের সরিয়ে নেওয়া হয় আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলে। যৌথ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করা ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও পাহারা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের নেয় পুলিশ। ক্যাপিটলকে ট্রাম্প সমর্থকদের দখলমুক্ত করতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পরের তিন ঘণ্টায় হলওয়েগুলো দিয়ে ট্রাম্প সমর্থকদের ছোটাছুটি ও বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে খোঁজাখুঁজি, হাঙ্গামা-বিশৃঙ্খলায় এক নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সহিংসতার মধ্যে গুলিতে একজন নারী নিহত হন। পরে আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর জানায় ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ। এফবিআই জানায়, তারা দুটি সম্ভাব্য বিস্ফোরক ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করেছে।