মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেই সাথে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিন্টকে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়েছেন উপ-রাষ্ট্রপতি উ মিন্ট সোয়ে।
এদিকে শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও জরুরি অবস্থা জারি কারণ হিসেবে গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে ‘ভোট জালিয়াতির’ ঘটনায় এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। সেনানিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ভাষণে আজ ১ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সকালে এমন দাবি করেছেন সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং।
তিনি জানিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে জরুরি অবস্থা জারি পর দেশটিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্যকে টহল দিতে দেখা গেছে।
দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সাথে অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বেসামরিক সরকারের বেশ কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। টানা উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটলো।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এনএলডি। দেশটির সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ৩২২টি আসন প্রয়োজন হলেও এনএলডি ৩৪৬টি আসনে জয়লাভ করে।
তবে প্রতারণা ও কারচুপির অভিযোগ তুলে এই ফল মেনে নিতে অস্বীকার করে সেনাসমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)। তারা নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের দাবি, নির্বাচনে ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ভোট জালিয়াতি হয়েছে।
এদিকে ওই নির্বাচনে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ভোটারদের ভোট বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও সমালোচনা করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।
গার্ডিয়ানের এক নিবন্ধে সু চির গ্রেপ্তারের ঘটনাটিকে ‘মিয়ানমারের ১০ বছরের স্বাধীনতার অবসান’ হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে।
সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ঘিরে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা চলছিল।
এরই এক পর্যায়ে সোমবার সেনাবাহিনী দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে। সামরিক বাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ভাষণে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং লাইংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।