অযোধ্যায় রামমন্দিরের জায়গার পরিবর্তে দেওয়া জমিতে নতুন মসজিদ ও সংলগ্ন হাসপাতালের নকশা প্রকাশ করেছে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন (আইআইসিএফ) ।
গত বছর সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের এই মসজিদ নির্মাণের কথা বলা হয়। বহুদিন ধরে উত্তর প্রদেশে বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির নিয়ে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধ নিয়ে গত বছর সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়। তাতে মসজিদ নির্মাণের জন্য আলাদা জমি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় সরকারকে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর এ প্রকল্পের প্রথম অংশ হিসেবে মসজিদটির গঠন কেমন হবে তার চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হওয়ার কথা রয়েছে। এর পাশেই নির্মাণ হবে একটি হাসপাতাল।
শনিবার প্রকাশিত নকশায় নতুন মসজিদটি পাশ্চাত্য স্থাপত্যের আদলে নির্মিত হচ্ছে বলে দেখা গেছে। এতে বিশালাকার গম্বুজ আর মসজিদ চত্বরে কার পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা থাকছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার। কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণে গত বছর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সায় দিয়েছিল; মসজিদের জন্য অন্যত্র পাঁচ একর জমি দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল তারা।সে অনুযায়ী সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে লখনৌ-গোরক্ষপুর মহাসড়কের কাছে ধানিপুরে জমি দেওয়া হয়। ওয়াকফ বোর্ড পরে ওই জমিতে মসজিদসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণে আইআইসিএফ গঠন করে।
দ্বিতীয় পরিকল্পনায় সেখানে হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ট্রাস্ট। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে আরো বলা হয়, বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর নতুন করে মুসলিমদের জন্য এই মসজিদ নির্মাণ করা হলেও এর নাম কি হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ট্রাস্ট। তবে এটা জানা গেছে মসজিদটি কোনো সম্রাট বা রাজার নামে নামকরণ করা হবে না। ফলে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, এই মসজিদ সম্রাট বাবরের নামে নামকরণ হচ্ছে না। মসজিদটির পরিকল্পনা বা ডিজাইনের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের সমসাময়িক নানা মসজিদ অনুসরণ করা হয়েছে। এরপর কম্পিউটারে তার একটি ছবি দাঁড় করানো হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ছবির মতো একটি বাগানের ভিতরে কাচে ঘেরা মসজিদের একটি বিশাল ডোম। মসজিদটির পাশেই দেখা যায় ভবিষ্যতদর্শী একটি হাসপাতাল ভবন। আইআইসিএফ ট্রাস্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, সারা বিশ্বের মসজিদগুলোতে যে আধুনিক স্থাপত্যশৈলী প্রদর্শন করা হয়েছে তারই প্রতিফলন ঘটেছে এই ডিজাইনে। লখনৌতে আইআইসিএফ ট্রাস্ট অফিসে প্রফেসর এসএম আখতার ৫ একর জায়গার ওপর এই ভবনের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। এখানে যে হাসপাতাল স্থাপন করা হবে তাতে আশপাশের শিশুদের এবং বঞ্চিত অভিভাবকদের এখানে চিকিৎসা দেয়া হবে।
“হাসপাতালে ৩০০ শয্যার হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আনা হবে। মসজিদটি সৌরশক্তিচালিত হবে। মসজিদের ভিতরের তাপমাত্রা বাড়ানো-কমানোর ব্যবস্থা থাকবে,” বলেছেন তিনি।হাসপাতাল ভবনের ভিতরে থাকবে আইআইসিএফ ট্রাস্ট্রের অফিস এবং প্রকাশনা।
চলতি বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় মহাসমারোহে নতুন রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও মসজিদ নির্মাণে কী হল, সে সম্বন্ধে কোনো সাড়াশব্দ শোনা যাচ্ছিল না।