যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের (কোভিড ১৯) নতুন ধরন (স্ট্রেইন) ছড়িয়ে পড়ার পর আতঙ্কে পুরো ইউরোপ। এর আগেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কড়া লকডাউন জারি করা হয়। যারা এখনো লকডাউনের ঘোষণা দেয়নি, তারাও খুব শিগগির লকডাউনের পথে হাঁটবে। ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আকাশপথ, রেলপথসহ সব সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য কার্যত ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন স্ট্রেইন আরও অন্তত চারটি দেশে শনাক্ত হয়েছে। তবে আশার কথা শুনিয়েছেন জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, করোনার এই স্ট্রেইনের বিরুদ্ধেও ফাইজার–বায়োএনটেকের তৈরি টিকা কার্যকর।
জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্রের চাপের মুখে ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি (ইএমএ)। আজ সোমবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে আগামীয় কয়েকদিনের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এখবর জানিয়েছে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছিল ইউরোপেরই দেশ ব্রিটেন। পরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনটি জরুরি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ শুরু করায় ইইউর উপর চাপ বাড়ছিল। বিশেষ করে জার্মানির পক্ষ থেকে। কারণ এই ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবনে জড়িয়ে আছে দেশটির কোম্পানি বায়োএনটেক। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার ও জামার্নির বায়োএনটেক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবন করেছে।
আজ সোমবার অনলাইন প্রেস কনফারেন্সে ইএমএ প্রধান এমের কুক বলেন, আমি আনন্দিত যে, ইইমএ’র বৈজ্ঞানিক কমিটি আজ বৈঠক করেছে। তারা ইইউতে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনকে শর্তসাপেক্ষে বাজারজাতকরণের সুপারিশ করেছে।
ইএমএ প্রধান আরও বলেন, আমাদের বৈজ্ঞানিক অভিমত ইইউতে ভ্যাকসিনটির অনুমোদনের পথ সুগম করেছে। এর আওতায় থাকবে ইইউভুক্ত ২৭টি দেশ। দুর্ভোগ ও ভয়াবহতা সৃষ্টিকারী মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সত্যিকার অর্থেই এটি ঐতিহাসিক বৈজ্ঞানিক অর্জন। মাত্র এক বছরের কম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন উদ্ভাবন ও রোগের বিরুদ্ধে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কুক বলেন, ফাইজারের ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনটি নতুন প্রজাতির বিরুদ্ধে কার্যকর নয় বলে কোনও প্রমাণ নেই।