করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার ঘোষিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবারগণভবন থেকে অনলানে যুক্ত হয়ে ডিজিটালি এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে যাক সেটি আমরা চাইনি, এজন্য ফলাফল ঘোষণা দিলাম।”
পরীক্ষা না নিয়ে ফল প্রকাশে আইন সংশোধনের পর একযোগে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হল।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে।
কিন্তু করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার আগে এসএসসি পরীক্ষা হয়ে গেলেও আটকে যায় এইচএসসি পরীক্ষা।
শেষ অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে ২০২০ সালের এইচএসসির ফল নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হল।
শেখ হাসিনা বলেন, “ভেবেছিলাম অবস্থার পরিবর্তন হলে পরীক্ষা নিতে পারব। কিন্তু নতুনভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে একই পদ্ধতিতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
দুই পরীক্ষার ফলাফল ভিত্তিতে এইচএসসির মূল্যায়নের ফল প্রস্তুত করা কঠিন কাজ ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এ কাজটি করতে পেরেছেন তারা সবাই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
এ সময় তিনি করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে বা ফল দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
আইনে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশের বিধান থাকায় এবার তা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। ফলে বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করে গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে আইন সংশোধন করতে হয়।
সংসদে পাস হওয়া তিনটি বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সই করার পর সোমবার রাতে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ গেজেট আকারে জারি করে সরকার।
এরপর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রস্তুত, ঘোষণা ও সনদ বিতরণের জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোকে ক্ষমতা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
করোনাভাইরাসের টিকা কেনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “করোনাভাইরাস যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, সবাই যদি আরেকটু (স্বাস্থ্যবিধি) মেনে চলেন তবে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব এবং খুব দ্রুত আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারব।
“আমরা আশা করছি, হয়ত আগামী মার্চ-এপ্রিল…মার্চ মাসটা আমরা দেখব। কারণ আমাদের দেশে ব্যাপকহারে এই করোনাভাইরাস শুরু হয়েছিল। তবে ফেব্রুয়ারি মাস নজরে রাখব। যদি ফেব্রুয়ারি মাসে অবস্থা ভালো থাকে পরবর্তীতে আমরা সীমিত আকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেব, ছেলেমেয়ারা যাতে স্কুল-কলেজ বা ইউনির্ভাসিটিতে যেতে যেতে পারে সেই ব্যবস্থাটা আমরা নেব, সেই চিন্তাভাবনা আমাদের আছে।”