ঢাকা ১২:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা সমু চৌধুরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে সবার নজর এখন লন্ডনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে ১০৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত ইসরায়েলি হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তেহরান ইসরায়েলকে ‘ভয়াবহ পরিণামের’ হুঁশিয়ারি দিলেন খামেনি ইরানের রাডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো তৃতীয় ধাপে আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র যতক্ষণ প্রয়োজন ইরানে হামলা চলবে: নেতানিয়াহু

“এ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের,” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ১১:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ৩০০ Time View

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের এই অর্জন তুলে ধরতে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, “এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভার্চুয়ালি এই সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাসিনা।

বিকেল সোয়া চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রী তার নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে আসেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন এখন চলছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের এই অর্জন গত ১২ বছরের নিরলস পরিশ্রমের ফসল।  এ অর্জনের কৃতিত্ব জনগণের । তিনি উন্নয়নশীল দেশের এই উত্তোরণকে টেকসই ও সুসংহত করার আহ্বান জানান।

গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের স্বাক্ষরে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয় শনিবার বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসবেন।

জানা যায়, ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভা গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় দফা পর্যালোচনা শেষে  শুক্রবার গভীর রাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে।
সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে।

উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশ ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১৮২৭ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে উন্নয়নশীল দেশ হতে ৬৬ পয়েন্টের প্রয়োজন; বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৭৫.৩।

অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে কোনো দেশের পয়েন্ট ৩৬ এর বেশি হলে সেই দেশকে এলডিসিভুক্ত রাখা হয়, ৩২ এ নেমে আসার পর উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন হয়। সেখানে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ২৫ দশমিক ২।

সিডিপির প্রবিধান অনুযায়ী, উত্তরণের সুপারিশ পাওয়ার পর একটি দেশ তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রস্তুতিকালীন সময় ভোগ করতে পারে।

করোনাভাইরাসের মহামারির বাস্তবতায় উত্তরণ প্রক্রিয়াকে টেকসই ও মসৃণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সিডিপির কাছে প্রস্তুতির জন্য পাঁচ বছর সময় চাওয়া হয়। এখন উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেলে পাঁচ বছরের প্রস্তুতিকাল শেষে ২০২৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে আনুষ্ঠানিক উত্তরণ ঘটবে।

উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠলে সস্তা ঋণ পাওয়া এবং বিভিন্ন রপ্তানি সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। উত্তরণের প্রস্তুতি পর্বে সেই সুবিধাগুলো চেয়েছে বাংলাদেশ। এই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশে  উত্তরণের পরও পাঁচ বছর এই সুবিধাগুলো পাবে বাংলাদেশ।

প্রস্তুতির এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সব সুযোগসুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ পেতে চলেছে, যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।

জাতিসংঘ ১৯৭১ সালে কিছু নির্ণায়কের উপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে কম উন্নত দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি হিসেবে পৃথকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করে। ১৯৭১ সালে স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা ছিল ২৫, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪৬-এ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এ পর্যন্ত বতসোয়ানা, কেপভার্দে, মালদ্বীপ, সামোয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি ও ভানুয়াতু উত্তরণ ঘটাতে পেরেছে। এবার সেই কাতারে শামিল হচ্ছে বাংলাদেশ।

Tag :
জনপ্রিয়

ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে

“এ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের,” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Update Time : ১১:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের এই অর্জন তুলে ধরতে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, “এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভার্চুয়ালি এই সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাসিনা।

বিকেল সোয়া চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রী তার নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে আসেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন এখন চলছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের এই অর্জন গত ১২ বছরের নিরলস পরিশ্রমের ফসল।  এ অর্জনের কৃতিত্ব জনগণের । তিনি উন্নয়নশীল দেশের এই উত্তোরণকে টেকসই ও সুসংহত করার আহ্বান জানান।

গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের স্বাক্ষরে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয় শনিবার বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসবেন।

জানা যায়, ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভা গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় দফা পর্যালোচনা শেষে  শুক্রবার গভীর রাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে।
সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে।

উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশ ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১৮২৭ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে উন্নয়নশীল দেশ হতে ৬৬ পয়েন্টের প্রয়োজন; বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৭৫.৩।

অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে কোনো দেশের পয়েন্ট ৩৬ এর বেশি হলে সেই দেশকে এলডিসিভুক্ত রাখা হয়, ৩২ এ নেমে আসার পর উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন হয়। সেখানে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ২৫ দশমিক ২।

সিডিপির প্রবিধান অনুযায়ী, উত্তরণের সুপারিশ পাওয়ার পর একটি দেশ তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রস্তুতিকালীন সময় ভোগ করতে পারে।

করোনাভাইরাসের মহামারির বাস্তবতায় উত্তরণ প্রক্রিয়াকে টেকসই ও মসৃণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সিডিপির কাছে প্রস্তুতির জন্য পাঁচ বছর সময় চাওয়া হয়। এখন উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেলে পাঁচ বছরের প্রস্তুতিকাল শেষে ২০২৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে আনুষ্ঠানিক উত্তরণ ঘটবে।

উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠলে সস্তা ঋণ পাওয়া এবং বিভিন্ন রপ্তানি সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। উত্তরণের প্রস্তুতি পর্বে সেই সুবিধাগুলো চেয়েছে বাংলাদেশ। এই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশে  উত্তরণের পরও পাঁচ বছর এই সুবিধাগুলো পাবে বাংলাদেশ।

প্রস্তুতির এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সব সুযোগসুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ পেতে চলেছে, যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।

জাতিসংঘ ১৯৭১ সালে কিছু নির্ণায়কের উপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে কম উন্নত দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি হিসেবে পৃথকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করে। ১৯৭১ সালে স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা ছিল ২৫, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪৬-এ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এ পর্যন্ত বতসোয়ানা, কেপভার্দে, মালদ্বীপ, সামোয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি ও ভানুয়াতু উত্তরণ ঘটাতে পেরেছে। এবার সেই কাতারে শামিল হচ্ছে বাংলাদেশ।