রোনা আক্রান্ত এক যাত্রীকে নিয়ে দোহা থেকে শুক্রবার ঢাকায় অবতরণ করেছে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমান। কিউআর-৪১৯ ফ্লাইটে আসা ওই যাত্রীকে পরীক্ষার পর করোনা ধরা পড়ে।
ওই যাত্রীর বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বাহাদুগার গ্রামে। তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাৎক্ষণিক কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম বিষয়টি তাদের জানা নেই।
করোনার দ্বিতীয় ঠেকাতে গত ৪ ডিসেম্বর থেকে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসকে তার দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী দেশে আসা কোনো যাত্রী করোনা উপসর্গ থাকলে ‘নেগেটিভ’ সনদ থাকলেও তাকে সরাসরি নির্ধারিত হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করে চিকিৎসা দেওয়া হবে। যাদের উপসর্গ থাকবে না, তাদের ১৪ দিন ‘হোম কোয়ারেন্টানে’ থাকতে হবে।
করোনাভাইরাসের নেগেটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ( বেবিচক) নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন নিষেধ করা হয়। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে প্রতিদিন গড়ে প্রায় একশজন করে যাত্রী সনদ ছাড়াই দেশে ফিরেছেন।
সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করায় রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ একাধিক বিমান সংস্থাকে জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে যাত্রীদেরও জরিমানা করা হয়। করোনাভাইরাসের সনদ ছাড়া আগতদের অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ থেকে ফেরেন।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন দেশের ২৪টি ফ্লাইটে তিন হাজার ৩৮ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে ইস্তানবুল থেকে তুরস্ক এয়ালাইন্সের (টিকে-৭১২) আগত যাত্রীদের তিনজন এবং লন্ডন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি-২০২) দুজন যাত্রী সনদ ছাড়া আসেন। তাদেরকে উত্তরার দিয়াবাড়ির প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়।
গত ২০ দিনে আন্তর্জাতিক রুটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার ২১৫ জন (৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত)। এ সময়ে বিভিন্ন ফ্লাইটে আগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে- তিন হাজার ৮৭৩ জন (৩০৪ জন কোয়োরেন্টাইনে), দুই হাজার ৯৫৭ জন (কোয়োরেন্টাইনে ১৯৫ জন), তিন হাজার ২২৩ জন (কোয়োরেন্টাইনে ২৩৫ জন) তিন হাজার পাঁচ জন (কোয়োরেন্টাইনে ৮০ জন), তিন হাজার ৫১৯ জন ( কোয়োরেন্টাইনে ৪৮ জন), পাঁচ হাজার ৭৩৬ জন (কোয়োরেন্টাইনে ১১৮ জন), তিন হাজার ৮৪৭ জন (কোয়োরেন্টাইনে ৩০ জন), চার হাজার ১৩৫ জন (কোয়োরেন্টাইনে ২৩ জন), তিন হাজার ৮৮১ জন ( কোয়োরেন্টাইনে চার জন), চার হাজার ৫০ জন (কোয়োরেন্টাইনে ২৬৫ জন), চার হাজার ২৭৯ জন (কোয়োরেন্টাইনে একজন), চার হাজার ৩৭৩ জন (কোয়োরেন্টাইনে ৪১৬ জন), চার হাজার ৪৭৮ জন ( কোয়ারেন্টাইনে নেই), তিন হাজার ৫২ জন (কোয়ারেন্টাইনে একজন), তিন হাজার ২৮৪ (কোয়ারেন্টাইনে চারজন), দুই হাজার ৮২৬ জন (কোয়ারেন্টাইনে ১৫৫ জন), দুই হাজার ৪১৮ জন (কোয়ারেন্টাইনে দুজন) এবং তিন হাজার ৪৩ জন (কোয়ারেন্টাইনে পাঁচজন)।
করোনার আরটি পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া কিংবা করোনা পজিটিভ যাত্রী নিয়ে আসাসহ বিভিন্ন কারণে যেসব এয়ারলাইন্সকে জরিমানা করা হয়, তাদের মধ্যে মালদিভিয়ান এয়াইলাইন্সকে দুই লাখ ৩৬ হাজার টাকা, এয়ার এশিয়াকে এক লাখ টাকা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ৩০ হাজার টাকা, সৌদি এয়ারলাইন্সকে দুই লাখ টাকা, ইতিহাদকে এয়ারওয়েজকে দুই লাখ টাকা এবং বুরাক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট অপারেটরকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।