করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ৫৫ বছর এবং তার চেয়ে বেশি বয়সের মানুষকে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। তবে কম বয়সী, অসুস্থ ও প্রবাসীদের আপাতত করোনার ভ্যাকসিন দেয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভ্যাকসিন নিয়ে সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য আমরা ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এর মধ্যে টেকনোলজিস্ট, নার্স, মিডওয়াইফ ও ভলান্টিয়ার। ভ্যাকসিন যাতে সুন্দরভাবে দেয়া যায় সেজন্য একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে। আইসিটি মন্ত্রণালয় এটি তৈরি করছে। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছি। অ্যাপসের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রার্থী নিবন্ধন করতে পারবেন। সেখানে কিছু তথ্য দিলে তিনি নিবন্ধিত হবেন। পরে তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণের সময় ও স্থান পাবেন। সেখানে নিয়ম মেনে উপস্থিত হলে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, আমরা কাদের ভ্যাকসিন দেব, তা আগেও বলেছি। যারা ফ্রন্টলাইনাররা; যেমন— চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, সাংবাদিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কাররা আগে পাবেন। আমরা ৫৫ থেকে বেশি বয়স্কদের পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেয়ার চিন্তাভাবনা করছি।
আগামী নয় দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসতে পারে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন শিগগিরই অনুমোদন দেবে। এ ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম। অনেক দেশের তুলনায় কম দামে ও অল্প সময়ে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি মাত্র ৪২৫ টাকায় পাওয়া যাবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের প্রায় ছয় কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিনের অর্ডার নিশ্চিত করা হয়েছে। এরমধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজই পাওয়া যাবে। প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ আসবে। আগামী ২৫ বা ২৬ জানুয়ারি অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের প্রথম চালানটি বাংলাদেশে আসতে পারে। পর্যায়ক্রমে আরো অর্ডার দেয়া হবে। প্রথম চালানের ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে তালিকা প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে।
তিনি জানান, দেশজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার ৭৩৪৪টি দল তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি দলে দুজন টিকাদান কর্মী এবং চার স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে ছয়জন সদস্য থাকবেন। একটি দল প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জন মানুষকে টিকা দিতে পারবে।
তিনি বলেন, সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুটি মনিটরিং সেল তৈরি করা হচ্ছে, যা শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করবে। ভ্যাকসিন সারাদেশে কি অবস্থায় আছে, কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তাদের পরার্মশ দেয়ার কাজ করবে। প্রাইভেট সেকটরকেও মনিটরিং করবে।”
বাংলাদেশে থাকা বিদেশি নাগরিকদেরও টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা টিকা দেব।’