শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ হেমন্তকাল, ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
রাত পোহালেই সমুদ্রনগরী কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে প্রথম যাত্রা শুরু করবে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ আচরণবিধি লঙ্ঘন তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১২ জনকে ইসির শোকজ তফসিল পুনর্নির্ধারণের আর কোনো সুযোগ নেই: ইসি সচিব নির্বাচনে অংশ নিতে ৮২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ৩১৪০ পদে নিয়োগ আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মার্কিন শ্রমনীতি নিয়ে খুব উদ্বেগ নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফরিদপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন প্রার্থীরা আবারো ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে বিএনপি

করোনা আতঙ্ক কমছে, ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১
  • ১৮৬ Time View

মহামারী করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সীমিত পরিসরে খুলতে পারে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে এ লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পাশাপাশি ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের সকল পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারেও সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ স্কুল খুলে দেয়ার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি রেখেছে। সরকারের নির্দেশনা পেলেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে করোনা মোকাবিলার জন্য সরকার শিগগিরই করোনার টিকা আনার প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ছাড়াও বর্তমানে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে। মানুষের মধ্যে আগের মতো উদ্বেগ ও আতঙ্ক নেই। যেভাবে মৃত্যুর হার কমছে ও সুস্থতার হার বাড়ছে।

এ অবস্থায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

দেশে করোনা মহামারী দেখা দেয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেয়া দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই ছুটিকে বাড়ানো হয় দফায় দফায়। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলমান ছুটিকে আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রসঙ্গে গত ২৯ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি যদি ভালো হয় তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে মে পর্যন্ত ক্লাস চলমান থাকবে।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হলে আগামী বছরের জুনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেয়া হবে। এরপর জুলাই-আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।

এদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকায় দ্রুত দেশের সকল শিক্ষপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে অভিভাবক ও সচেতন মহলের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে সরকারকে। গত সোমবার গাজীপুর সদরের এক শিক্ষার্থীর পিতা মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে এই নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। অভিভাবকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউনিসেফও দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার তাগিদ দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, স্কুল খোলার পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অগ্রাধিকারে রাখতে হবে। স্কুল বন্ধ থাকার ফলে সিলেবাসের পড়ার ক্ষতি নয়, পরীক্ষায় বসতে না পারার লোকসান নয়। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের জীবনে প্রতিটি দিন, প্রতিটি বছরই শরীরমনের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যা নিছক অনলাইনের ক্লাস পূরণ করতে পারে না। তাই স্কুলগুলো খোলা রাখতে বা পুনরায় খোলার পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দিতে কোনো প্রচেষ্টাই বাদ দেয়া উচিত হবে না।

ইউনিসেফ প্রধান জানান, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুলগুলো বন্ধ আছে। যে ক্ষতি শিক্ষার্থীদের গৃহবন্দি জীবনে ঘটছে, তার প্রভাব সময়ের গণ্ডিতে বন্দি থাকবে না। এর ধকল চলবে আজীবন। তিনি বলেন, মহামারীর চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাপী ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে স্কুলগামী শিশুদের এক তৃতীয়াংশই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পায়নি। তাই স্কুলগুলো বন্ধ রাখায় তা বিপর্যয় নিয়ে এনেছে।

গাজীপুরের অভিভাবক মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার তার পাঠানো আইনি নোটিশে বলেন, গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশের সব শিক্ষা বন্ধ রয়েছে। এ পর্যন্ত ১১ বার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিশ দিয়েছে সরকার। দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীরা এ সময়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করছে, টিভি দেখে সময় ব্যয় করছে। এছাড়া মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে খারাপ অভ্যাস গড়ে উঠছে।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সব অফিস-আদালত আর যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়। টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটির পর ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস খুলে যানবাহন চলাচল শুরু হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধই থাকে। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি।

করোনার কারণে গত বছর এইচএসসি, পিএসসি, জেএসসি সমমানের পাবলিক পরীক্ষাগুলো নেয়া সম্ভব হয়নি। অতীতের ফল বিশ্লেষণ করে এসব পরীক্ষার ফল দেয়া হবে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রতিটি ক্লাসেই পরীক্ষা না নিয়ে পরবর্তী উত্তীর্ণ করে তুলে দেয়া হয় পরের ক্লাসে।

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102