করোনার টিকা প্রয়োগে ১৩৭ পৃষ্ঠার নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া, যা বেক্সিমকোর মাধ্যমে কিনে আনছে বাংলাদেশ। সেরামের এই টিকা গতকাল রাতেই জরুরি আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের সাময়িক অনুমোদন (ইইউএ) দেন।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান জানান, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক সোমবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের সাময়িক অনুমোদন (ইইউএ) দিয়েছেন।
এদিকে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদনের পর সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি বাংলাদেশে ব্যবহারের আর কোনো বাধা থাকছে না।
সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ার এক মাসের মধ্যে তাদের টিকা সরবরাহ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন।
তিনি বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী এখন সেরাম ইনস্টিটিউটকে ধাপে ধাপে তিন কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে সরবরাহ করতে হবে।
দেশে করোনাভাইরাসের টিকা আনার আগাম প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো সব ঠিকঠাকই চলছিল। তবে রবিবার গভীর রাতে আন্তর্জাতিক ওই গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ভারত সরকার নিজ দেশে টিকার চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত টিকা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এ নিয়ে গতকাল সকাল থেকেই দেশে সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে শুরু হয় হুলুস্থুল। বেলা বাড়ার সঙ্গে তৎপরতা বেড়ে যায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ অন্যদের। দুপুরের আগেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী। বিকেলে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সন্ধ্যায় ব্রিফ করেন দেশে টিকা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর মাঝেই বিচ্ছিন্নভাবে ভারত ও বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চলতে থাকে যোগাযোগ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারতের পক্ষ থেকেও আসতে থাকে বক্তব্য।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের পক্ষ থেকে একই সুরে আগের মতোই নিশ্চিত করা হয়, চুক্তি অনুসারে যথাসময়ে, অন্য দেশের আগে এবং ভারত থেকে বাইরে টিকা রপ্তানির প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশই টিকা পাবে। এ ক্ষেত্রে কয়েক দিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেভাবে বলা হচ্ছিল, জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই দেশে টিকা আসবে, সেই অবস্থানেই রয়েছে সর্বশেষ পরিস্থিতি। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা হলেও তা বাংলাদেশে টিকা আসার পথে বাধা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে সব পক্ষ থেকেই।