ঢাকা ০৬:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ফরিদপুর জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি-সম্পাদকের পদ শূন্য ঘোষণা, নতুন দায়িত্ব প্রদান তিন বাহিনী প্রধানদের সঙ্গে জরুরি উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে বসেছেন নরেন্দ্র মোদি নিষিদ্ধ হলো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, প্রজ্ঞাপন জারি ফেসবুক-ইউটিউবে কেউ আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বললেও তাকে গ্রেফতার করা যাবে এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১১ মে ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি ১২মে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন ছাড়া নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রয়োজন নেই: এনসিপি আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার

কারা আগে করোনা ভ্যাকসিন পাবেন তার তালিকা প্রকাশ হবে

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১
  • ২৫৭ Time View

ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ২০ লাখ ডোজ বৃহস্পতিবার বুঝে পেয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র বলছে, ভারত থেকে কেনা টিকার প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ আসার কথা রয়েছে আগামী সোমবার। ওই টিকা আসার পর ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার একটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যবেক্ষণমূলক টিকাদান শুরু হবে।

টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হওয়ার পর এবার শুরু হবে টিকাদানের পালা। তবে টিকাদানের সঠিক দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী তিন পর্যায়ের পাঁচটি ধাপে ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। প্রথম পর্যায়ে দুই ধাপে ১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ৯৩৯ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে মোট জনগোষ্ঠীর তিন শতাংশ বা ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ২৮২ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এই তিন শতাংশের মধ্যে রয়েছেন কভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তিন লাখ ৩২ হাজার ২৭ জন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী। তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স এবং মিডওয়াইফারি পেশায় নিয়োজিত কর্মী, মেডিকেল ও প্যাথলজি ল্যাব কর্মী, পেশাদার স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্ন কর্মী, সাইকোথেরাপির সঙ্গে সংশ্নিষ্টরা, মেডিসিন পারসোনেল, কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী ও অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রয়েছেন। কভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বেসরকারি খাতের ছয় লাখ কর্মীও টিকা পাবেন।

কারা আগে পাচ্ছেন:

যে ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীতে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে আছেন: মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষা কর্মী,গণপরিবহন কর্মী৷ ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, বয়োজ্যেষ্ঠ বলতে ষাটোর্ধ বয়সের ব্যক্তিদের বোঝানো হচ্ছে৷

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার, সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তিন লাখ, বেসরকারি কর্মী রয়েছেন সাত লাখ, স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন এনজিও কর্মী রয়েছেন দেড় লাখ৷ গণমাধ্যম কর্মী রয়েছেন ৫০ হাজার৷ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পাঁচ হাজার৷ পুলিশ বাহিনীর সদস্য দু’লাখের ওপরে৷ ক্যানসার, যক্ষ্মা আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ধরা হয়েছে এক লাখ দুই হাজারের মতো৷ সেনাবাহিনী জন্য ধরা হয়েছে তিন লাখ৷ সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ধরা হয়েছে ৭০ হাজার৷

জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য বিএসএমএমইউ-এর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছি৷ তবে তার মধ্যে জনপ্রতিনিধি ছিলো বলে আমার মনে হয় না৷ আর আমরা ওই ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা করেনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে তাদের জন্য বলেছি৷ যেমন চিকিৎসক অগ্রাধিকার পাবেন৷ কিন্তু যে চিকিৎসক সরাসরি চিকিৎসা কাজে যুক্ত নন তিনি পাবেন না৷ পুলিশের কথা বলেছি৷ কিন্তু যে পুলিশ সদস্য সরাসরি ফিল্ডে কাজ করেন না তিনি পাবেন না৷”

অগ্রাধিকার নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘করোনায় এখন পর্যন্ত বৃদ্ধরা বেশি মারা মারা গেছে৷ আর তারা আমাদের বাবা-চাচা৷ আবার যারা করোনার চিকৎসা করেন তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন৷ এপর্যন্ত ১০৯ জন ডাক্তার মারা গেছেন৷ আসল কথা হলো যাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি তাদের আগে দেয়া হবে৷”

তার মতে, ‘‘বাংলাদেশে  করোনার টিকার জন্য যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে, সারাবিশ্বেও একইভাবে করা হচ্ছে৷ আর এটা যাতে নিশ্চিত হয় তার জন্য নীতি হলো করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি৷” ভ্যাকসিনের আগ্রাধিকার তালিকা ও বিতরণ পদ্ধতি নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ এই পরিকল্পনায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বিতরণ কৌশলও রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই অগ্রাধিকারভুক্ত সবাই একবারে ভ্যাকসিন পাবেন না৷ কোন পর্যায়ে কত ভ্যাকসিন আসবে তার ওপরে নির্ভর করছে কতজন পাবেন৷ তবে অগ্রাধিকারের বাইরে সাধারণ মানুষের জন্যও ভ্যাকসিন থাকবে৷ তারাও কীভাবে পাবেন তারও একটা নিয়ম করা হয়েছে৷”

Tag :

ফরিদপুর জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি-সম্পাদকের পদ শূন্য ঘোষণা, নতুন দায়িত্ব প্রদান

কারা আগে করোনা ভ্যাকসিন পাবেন তার তালিকা প্রকাশ হবে

Update Time : ০৯:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১

ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ২০ লাখ ডোজ বৃহস্পতিবার বুঝে পেয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র বলছে, ভারত থেকে কেনা টিকার প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ আসার কথা রয়েছে আগামী সোমবার। ওই টিকা আসার পর ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার একটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যবেক্ষণমূলক টিকাদান শুরু হবে।

টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হওয়ার পর এবার শুরু হবে টিকাদানের পালা। তবে টিকাদানের সঠিক দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী তিন পর্যায়ের পাঁচটি ধাপে ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। প্রথম পর্যায়ে দুই ধাপে ১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ৯৩৯ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে মোট জনগোষ্ঠীর তিন শতাংশ বা ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ২৮২ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এই তিন শতাংশের মধ্যে রয়েছেন কভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তিন লাখ ৩২ হাজার ২৭ জন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী। তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স এবং মিডওয়াইফারি পেশায় নিয়োজিত কর্মী, মেডিকেল ও প্যাথলজি ল্যাব কর্মী, পেশাদার স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্ন কর্মী, সাইকোথেরাপির সঙ্গে সংশ্নিষ্টরা, মেডিসিন পারসোনেল, কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী ও অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রয়েছেন। কভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বেসরকারি খাতের ছয় লাখ কর্মীও টিকা পাবেন।

কারা আগে পাচ্ছেন:

যে ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীতে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে আছেন: মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষা কর্মী,গণপরিবহন কর্মী৷ ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, বয়োজ্যেষ্ঠ বলতে ষাটোর্ধ বয়সের ব্যক্তিদের বোঝানো হচ্ছে৷

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার, সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তিন লাখ, বেসরকারি কর্মী রয়েছেন সাত লাখ, স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন এনজিও কর্মী রয়েছেন দেড় লাখ৷ গণমাধ্যম কর্মী রয়েছেন ৫০ হাজার৷ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পাঁচ হাজার৷ পুলিশ বাহিনীর সদস্য দু’লাখের ওপরে৷ ক্যানসার, যক্ষ্মা আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ধরা হয়েছে এক লাখ দুই হাজারের মতো৷ সেনাবাহিনী জন্য ধরা হয়েছে তিন লাখ৷ সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ধরা হয়েছে ৭০ হাজার৷

জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য বিএসএমএমইউ-এর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছি৷ তবে তার মধ্যে জনপ্রতিনিধি ছিলো বলে আমার মনে হয় না৷ আর আমরা ওই ১০ ধরনের জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা করেনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে তাদের জন্য বলেছি৷ যেমন চিকিৎসক অগ্রাধিকার পাবেন৷ কিন্তু যে চিকিৎসক সরাসরি চিকিৎসা কাজে যুক্ত নন তিনি পাবেন না৷ পুলিশের কথা বলেছি৷ কিন্তু যে পুলিশ সদস্য সরাসরি ফিল্ডে কাজ করেন না তিনি পাবেন না৷”

অগ্রাধিকার নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘করোনায় এখন পর্যন্ত বৃদ্ধরা বেশি মারা মারা গেছে৷ আর তারা আমাদের বাবা-চাচা৷ আবার যারা করোনার চিকৎসা করেন তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন৷ এপর্যন্ত ১০৯ জন ডাক্তার মারা গেছেন৷ আসল কথা হলো যাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি তাদের আগে দেয়া হবে৷”

তার মতে, ‘‘বাংলাদেশে  করোনার টিকার জন্য যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে, সারাবিশ্বেও একইভাবে করা হচ্ছে৷ আর এটা যাতে নিশ্চিত হয় তার জন্য নীতি হলো করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি৷” ভ্যাকসিনের আগ্রাধিকার তালিকা ও বিতরণ পদ্ধতি নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ এই পরিকল্পনায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বিতরণ কৌশলও রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই অগ্রাধিকারভুক্ত সবাই একবারে ভ্যাকসিন পাবেন না৷ কোন পর্যায়ে কত ভ্যাকসিন আসবে তার ওপরে নির্ভর করছে কতজন পাবেন৷ তবে অগ্রাধিকারের বাইরে সাধারণ মানুষের জন্যও ভ্যাকসিন থাকবে৷ তারাও কীভাবে পাবেন তারও একটা নিয়ম করা হয়েছে৷”