চার ফুট উচ্চতার একেকটি গাছ। ডালে থোকায় থোকায় ধরে আছে বরই। পরিপক্ব বরইগুলো দেখতে লাল আপেলের মতো। স্বাদে মিষ্টি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এগুলো কাশ্মীরি আপেল কুল হিসেবে পরিচিত। ফরিদপুর পৌরসভার নবগঠিত ৪ ওয়ার্ডের মহারাজপুর এলাকার যুবক মোঃ ফারুক মোল্লার বরইয়ের বাগান এ কাশ্মীরি আপেল কুল ও বল সুন্দরী বরই এর ব্যাপক ফলন হওয়ায় সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন তিনি।
ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী মোঃ ফারুক মোল্লা বিদ্যালয়ে রাতে নৈশ্য প্রহরীর কাজ শেষ করে দিনের পুরোটা সময় তার কুল বাগনে পরিশ্রম করে আজ ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখছে। মা,বাবা,স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে অভাব অনটনের পরিবারে আজ সুখের আলো হয়ে এসেছে এই বরইয়ের বাগান।
ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী মোঃ ফারুক মোল্লা জানান,বিদ্যালয়ে রাতে নৈশ্য প্রহরীর কাজ শেষ করে আগে দিনের বেলায় ইজি বাইক চালাতাম কিন্তু শহরে ইজি বাইক বেড়ে যাওয়ায় রোজগার কমে য়ায়। তখন পাশ্ববতী গোবিন্দপুর গ্রামের বাল্যবন্ধু বরই চাষি সাইফুল ইসলামের নিকট থেকে ৬ শত পিচ কাশ্মীরি আপেল কুল ও ৪ শত পিচ বল সুন্দরী বরই এর চারা এনে ২ একর জমিতে বরইয়ের চাষ শুরু করি। প্রথমবারের মতো কাশ্মীরি আপেল কুল ও বল সুন্দরী বরই চাষ করে গত সাড়ে ৯ মাসেই আমি বরই বাজারজাত করতে শুরু করেছি।মোঃ ফারুক মোল্লা জানান,আমি মোট এক হাজারটি বরইয়ের চারা ক্রয় করি ৫০ হাজার টাকা দিয়ে। পাশাপাশী জমি প্রস্তুত ,সার ও বালাই নাশক ব্যবহার করে আমার মোট খচর হয়েছে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা । প্রথম বছরেই প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ২৫ কেজি কুল ধরেছে।বতমান বাজারে ৮০ থেকে ১০০টাকা দরে বরই বিক্রি হচ্ছে ।সব মিলিয়ে এ বছর তিনি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। ইতিমধ্যে বাগান থেকে অনেকেই বরই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এবং অনেক পাইকার বরই কিনে নেবার অডার করে গেছেন।এবং স্থানীয় বাজারে ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে।
ফারুক মোল্লা জানান, তিনি আগামী বছর আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এই বরইয়ের চাষ করবেন । পুরো বাগান জুড়েই লাল-সবুজের সমারহ। লাভের আশায় পুরো পরিবারের মুখে দেখা দিয়েছে হাসিক ঝিলিক।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কমকর্তা মোঃ আজাদ হোসেন জোদ্দার জানান, যেখানে পানি জমতে না পারে, রৌদ্রুজ্জ্বল, উচুঁ জমিতে কুল বাগান ভালো হয়। যে বাগানে যত বেশি রোদের আলো লাগবে সেই জমির কুল বেশি মিষ্টি হবে। ৫-৬ হাত দুরত্ব গাছের চারা রোপণ করতে হয়। তুলানামূলক রোগ-বালাইও কম। নতুনভাবে কেউ যদি কাশ্মিরি আপেল কুলের বাগান করেন এবং পরামর্শ চাইলে তাকে অবশ্যই সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।