গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডারের ছিদ্র থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চারজনের মৃত্যু হয়েছে; পুড়েছে অর্ধশতাধিক বসত ঘর। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, সোমবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার কালামপুর পূর্বপাড়া নব্বই কলোনিতে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।
পরে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে স্টেশন কর্মকর্তা কবিরুল আলম জানান।
আগুন যখন লাগে, সে সময় এসব বসত ঘরের অধিকাংশ বাসিন্দাই ঘুমিয়ে ছিলেন। অন্যরা বেরোতে পারলেও একটি বাড়ির চারজন ঘরের ভেতরেই জীবন্ত দগ্ধ হন।
এই চারজন হলেন- গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার সাইন্দাইল এলাকার মো. মিলন মিয়া (৪০) তার স্ত্রী মুন্নি বেগম (৩০), একই এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন (৪০) ও একই জেলার জগন্নাথপুরের পলাশবাড়ি এলাকার ওসমান গনির ছেলে মো. আব্দুল আউয়াল মিয়া (৪০)।
কবিরুল আলম বলেন, ভোরে কালামপুর পূর্বপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ভাড়া বাড়িতে রান্নার সময় গ্যাস সিলিন্ডারের ছিদ্র থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা দ্রুত আশপাশের বাড়ি-ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। মোহাম্মদ আলীর বাড়ি ছাড়াও মো. লিটন মিয়া, মো. জনি এবং জাকির হোসেনের বাড়ির ৬১টি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে আগুন।
স্থানীয় বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা এসব ঘরে ভাড়া থাকতেন। যে চারজন মারা গেছেন, তারা ছিলেন লিটন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটে। কবিরুল জানান, যে ৬১টি ঘর আগুনে পুড়েছে, তার মধ্যে ৫০টি ঘরে ভাড়াটে ছিল। বাকি ১১টি কক্ষ ছিল খালি।
কালিয়াকৈরের দমকল বাহিনীর স্টেশন অফিসার কবিরুল আলম বলেন, কালামপুর এলাকার মোহাম্মদ আলীর একজন ভাড়াটে ভোরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর সৃষ্ট আগুন আশপাশের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সকাল ৭টার দিকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান। ঘটনাস্থল থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য খাবার এবং মৃতদের দাফনের জন্য লাশ গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।
কালিয়াকৈর উপজেলার ইউএনও কাজী হাফিজুল আমিন জানান, জেলা প্রশাসন নিহতদের দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেবে। ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবারের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হবে।