দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের প্রভাব কাটিয়ে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি জুলাই মাসের ২৭ দিনে ১৫৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় জুলাই মাসে দুই বিলিয়ন ডলার নাও আসতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ থেকে ২৪ জুলাই ছয় দিনে দেশে প্রবাস আয় এসেছে সাত কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাস আয় এসেছিল সাত কোটি ৯০ লাখ ডলার।
সোমবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২২ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার এবং জুনে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৫৪ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, প্রবাসীরা দুই-এক মাস আয় পাঠাতে না পারেন। তবে যারা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠান, তার হুন্ডিতে পাঠাবেন না। আগামী এক সপ্তাহ বোঝা যাবে রেমিট্যান্স কমবে কি না।
এদিকে গত শনিবার বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় চলমান গুজব ও অপপ্রচার বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সপ্তাহব্যাপী সহিংস পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে দেশের প্রবাসী আয়েও। সহিংসতার কারণে ১৮ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ইন্টারনেট শাটডাউন এবং সহিংসতা দমনের জন্য সরকারের কারফিউ জারি ও সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে প্রায় এক সপ্তাহ স্থবির ছিল দেশের আর্থিক খাত। গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে মাত্র একদিন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ থেকে ২৪ জুলাই এই ছয়দিনে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে মাত্র ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অথচ চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, ১৮ থেকে ২৪ জুলাই এই ছয়দিনে সম্মিলিতভাবে রেমিট্যান্স এসেছে তার থেকে কম।
চলতি মাসের প্রথম ১৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহের হার গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশ ভালোই ছিল। গত বছর ১ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১২৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অপরদিকে চলতি বছরের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছে ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৩ কোটি ডলার বেশি।