ঢাকা ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে: নাহিদ ইসলাম দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে: এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আগামীকাল খোলা থাকছে সব সরকারি অফিস ড. ইউনূসের পদত্যাগ চায় না বিএনপি, আবেগের বশে করলে বিকল্প বেছে নেবে জাতি: সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতীয় একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না’ পোস্টটি মুছে দিলেন ফয়েজ আহমদ গুরুতর অসুস্থ নুসরাত ফারিয়া, সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখেছেন সেনাবাহিনী রাজনীতিতে নাক গলাতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আইসিসি ইভেন্টে পাকিস্তানের সঙ্গে একই গ্রুপে থাকতে চায় না ভারত গুজবে বিভ্রান্ত না হতে সেনাবাহিনীর আহ্বান

চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ১০০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ১০০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে চীন মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এ পদক্ষেপ নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শুরুতে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও গত সপ্তাহে এক লাফে ৩৪ শতাংশ ও পরে আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেন। এর ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপরে ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে চীন। এরপরে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ২১ শতাংশ বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র।

পরে গত ১০ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। তার আগে বুধবার ৯ এপ্রিল চীনা পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে ট্রাম্প প্রশাসন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ১০ এপ্রিল মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৪ থেকে ৮৪ শতাংশ করার একদিন পরেই মার্কিন পণ্যে নতুন করে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীন।

এদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক শুল্ক আরোপের ঘোষণায় টালমাটাল হয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বিশ্বকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি সঠিক ভাবে সামলানো না যায় তবে মন্দার চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

গত রোববার এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক হার ঘোষণা করবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই প্রতিশ্রুতির অর্থ হচ্ছে, চীন থেকে আমদানি করা স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ওপর দেওয়া শুল্ক ছাড় আর বেশি দিন থাকছে না। ট্রাম্প মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে আরও শক্তিশালী করতে চাচ্ছেন।

সোমবার ফেডারেল রেজিস্টারের ফাইলিংয়ে দেখা গেছে, ওষুধ এবং চিপসের বিদেশী উৎপাদনের উপর ব্যাপক নির্ভরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি- এমন যুক্তিতে ট্রাম্প প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই শুল্ক আরোপের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টর আমদানির বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের ২৩২ ধারার সর্বশেষ ব্যবহারকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথাকথিত খাতভিত্তিক শুল্কের ন্যায্যতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা এবং ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার কারণে চলতি বছর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে ধীর হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড) বলছে, ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮ শতাংশ হলেও এ বছর ২ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে যেতে পারে। এটি বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দিকে নিয়ে যাবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাও (ডব্লিউটিও) সতর্ক করেছে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে এ বছর বিশ্ব বাণিজ্য উল্টো পথে হাঁটবে। এতে কমে যাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও। জেনেভাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তারা আগে আশা করেছিল, এই বছর পণ্য বাণিজ্য ২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে। তবে হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য নীতির ফলে এ বছর পণ্য বাণিজ্য দশমিক ২ শতাংশ কমে যাবে।

Tag :

আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে: নাহিদ ইসলাম

চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ১০০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

Update Time : ০৫:৪০:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ১০০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে চীন মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এ পদক্ষেপ নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শুরুতে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও গত সপ্তাহে এক লাফে ৩৪ শতাংশ ও পরে আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেন। এর ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপরে ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে চীন। এরপরে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও ২১ শতাংশ বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র।

পরে গত ১০ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। তার আগে বুধবার ৯ এপ্রিল চীনা পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে ট্রাম্প প্রশাসন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ১০ এপ্রিল মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৪ থেকে ৮৪ শতাংশ করার একদিন পরেই মার্কিন পণ্যে নতুন করে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীন।

এদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক শুল্ক আরোপের ঘোষণায় টালমাটাল হয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বিশ্বকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি সঠিক ভাবে সামলানো না যায় তবে মন্দার চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

গত রোববার এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক হার ঘোষণা করবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই প্রতিশ্রুতির অর্থ হচ্ছে, চীন থেকে আমদানি করা স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ওপর দেওয়া শুল্ক ছাড় আর বেশি দিন থাকছে না। ট্রাম্প মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে আরও শক্তিশালী করতে চাচ্ছেন।

সোমবার ফেডারেল রেজিস্টারের ফাইলিংয়ে দেখা গেছে, ওষুধ এবং চিপসের বিদেশী উৎপাদনের উপর ব্যাপক নির্ভরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি- এমন যুক্তিতে ট্রাম্প প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই শুল্ক আরোপের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টর আমদানির বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের ২৩২ ধারার সর্বশেষ ব্যবহারকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথাকথিত খাতভিত্তিক শুল্কের ন্যায্যতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা এবং ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার কারণে চলতি বছর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে ধীর হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড) বলছে, ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮ শতাংশ হলেও এ বছর ২ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে যেতে পারে। এটি বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দিকে নিয়ে যাবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাও (ডব্লিউটিও) সতর্ক করেছে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে এ বছর বিশ্ব বাণিজ্য উল্টো পথে হাঁটবে। এতে কমে যাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও। জেনেভাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তারা আগে আশা করেছিল, এই বছর পণ্য বাণিজ্য ২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে। তবে হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য নীতির ফলে এ বছর পণ্য বাণিজ্য দশমিক ২ শতাংশ কমে যাবে।