ঢাকা ১১:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ফরিদপুরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেড় বছরের মধ্যে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ফরিদপুরে আলিয়াবাদ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটনার অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন ডাক্তার ওমর নাবির বাড়ি আগামী সপ্তাহেই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন ট্রাম্প এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ঢাকাসহ ২৩ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা বিচারকদের নিরাপত্তাসহ ২ দাবি, না মানলে কলম বিরতির হুঁশিয়ারি

জনগণ যদি সমর্থন না করে কোনও রাজনৈতিক দলের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দল হিসাবে আওয়ামী লীগ যদি অন্যায় করে থাকে, তবে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। দেশের আইন সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, অন্যায়কারীর বিচার হতে হবে। তো সেটি ব্যক্তি হোক, সেটি দলই হোক।

যারা জুলুম করেছে তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে। সেটি দলও হতে পারে। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানটা কী— এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমি ১৭ বছর যাবত প্রবাস জীবনে আছি। ওয়ান ইলেভেন, তথাকথিত ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় যেই শারীরিক নির্যাতন আমার উপরে হয়েছিল তারপরে চিকিৎসার জন্য আমি এই দেশে আসি। আমি যখন এখানে আসি, আমার ভাইকে আমি রেখে এসেছিলাম ছোট ভাইকে। আমি যখন এই দেশে আসি আমার সুস্থ মাকে আমি রেখে এসেছিলাম।

একটি ঘর রেখে এসেছিলাম। যেই ঘরে আমি এবং আমার ছোট ভাই বড় হয়েছি। যেই ঘরে আমার বাবার স্মৃতি ছিল। যেই ঘরে আমাদের দুই ভাইয়ের সন্তানরা জন্মগ্রহণ করেছিল। যেই ঘরে আমার মায়ের বহু স্মৃতি ছিল।

সেই স্মৃতিগুলোকে ভেঙেচুরে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ভাইকে আমি রেখে এসেছিলাম সেই ভাই এখন আর নেই। যেই সুস্থ মাকে রেখে এসেছিলাম সেই সুস্থ মা এখন সুস্থ নেই। শুধু অসুস্থই নন, উনার উপরে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি আমার পরিবারের যেই কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম, এটিকে আপনারা কাহিনী বলুন, বা সংগ্রাম বলুন যেটাই বলুন না কেন, এটি শুধু আমার কাহিনী না, বা আমার পরিবারের কাহিনী না। এরকম কাহিনী বাংলাদেশের শত না, হাজার হাজার পরিবারের। যে পরিবারের বাবা, যে পরিবারের ভাই, যে পরিবারের স্বামী তার ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, হ্যান্ডকাফ পারা অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় মারা গিয়েছে, তা না হলে হ্যান্ডকাফ পারা অবস্থায় জেলের ভিতরে মারা গিয়েছে, সহায়-সম্পত্তি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে- এই সকল অন্যায়, এই সকল হত্যা, এই সকল নির্যাতনের জন্য যারা দায়ী, যারা এসবের হুকুম দিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। এটি প্রতিশোধের কোন বিষয় নয়। এটি ন্যায়ের কথা। এটি আইনের কথা। অন্যায় হলে তার বিচার হতে হয়। কার সম্পর্কে কী মনোভাব সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

তিনি বলেন, দল হিসেবে তারা যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। দেশের আইন সিদ্ধান্ত নেবে। সোজা কথায় অন্যায়কারীর বিচার হতে হবে। তো সেটি ব্যক্তি হোক, সেটি দলই হোক। যারা জুলুম করেছে তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে। সেটি দলও হতে পারে।

আপনি ব্যক্তিগতভাবে কী মনে করেন? আওয়ামী লীগের কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকা উচিত নাকি, না?— এই প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমার মনে হয় আপনার কোনও কোনও প্রশ্নের উত্তরে আমি মনে হয় বলেছিলাম যে- আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য। আমরা বিশ্বাস করি এবং বিভিন্ন সময় বলিও আমরা বিএনপি যারা করি আমাদের রাজনৈতিক সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করতে চাই- যে দলের ব্যক্তিরা বা যে দল মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম করে, মানুষ খুন করে, দেশের মানুষের অর্থসম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে- জনগণ তাদেরকে সমর্থন করতে পারে বলে আমি মনে করি না। জনগণ যদি সমর্থন না করে কোনও রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক সংগঠনকে তাদের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না। যেহেতু জনগণের শক্তিতে আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সিদ্ধান্তে আমরা বিশ্বাস করি। জনগণের সিদ্ধান্তের উপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক আমি মনে করি জনগণ।

Tag :
জনপ্রিয়

ফরিদপুরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেড় বছরের মধ্যে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

জনগণ যদি সমর্থন না করে কোনও রাজনৈতিক দলের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না: তারেক রহমান

Update Time : ০৯:১৬:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দল হিসাবে আওয়ামী লীগ যদি অন্যায় করে থাকে, তবে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। দেশের আইন সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, অন্যায়কারীর বিচার হতে হবে। তো সেটি ব্যক্তি হোক, সেটি দলই হোক।

যারা জুলুম করেছে তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে। সেটি দলও হতে পারে। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানটা কী— এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমি ১৭ বছর যাবত প্রবাস জীবনে আছি। ওয়ান ইলেভেন, তথাকথিত ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় যেই শারীরিক নির্যাতন আমার উপরে হয়েছিল তারপরে চিকিৎসার জন্য আমি এই দেশে আসি। আমি যখন এখানে আসি, আমার ভাইকে আমি রেখে এসেছিলাম ছোট ভাইকে। আমি যখন এই দেশে আসি আমার সুস্থ মাকে আমি রেখে এসেছিলাম।

একটি ঘর রেখে এসেছিলাম। যেই ঘরে আমি এবং আমার ছোট ভাই বড় হয়েছি। যেই ঘরে আমার বাবার স্মৃতি ছিল। যেই ঘরে আমাদের দুই ভাইয়ের সন্তানরা জন্মগ্রহণ করেছিল। যেই ঘরে আমার মায়ের বহু স্মৃতি ছিল।

সেই স্মৃতিগুলোকে ভেঙেচুরে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ভাইকে আমি রেখে এসেছিলাম সেই ভাই এখন আর নেই। যেই সুস্থ মাকে রেখে এসেছিলাম সেই সুস্থ মা এখন সুস্থ নেই। শুধু অসুস্থই নন, উনার উপরে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি আমার পরিবারের যেই কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম, এটিকে আপনারা কাহিনী বলুন, বা সংগ্রাম বলুন যেটাই বলুন না কেন, এটি শুধু আমার কাহিনী না, বা আমার পরিবারের কাহিনী না। এরকম কাহিনী বাংলাদেশের শত না, হাজার হাজার পরিবারের। যে পরিবারের বাবা, যে পরিবারের ভাই, যে পরিবারের স্বামী তার ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, হ্যান্ডকাফ পারা অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় মারা গিয়েছে, তা না হলে হ্যান্ডকাফ পারা অবস্থায় জেলের ভিতরে মারা গিয়েছে, সহায়-সম্পত্তি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে- এই সকল অন্যায়, এই সকল হত্যা, এই সকল নির্যাতনের জন্য যারা দায়ী, যারা এসবের হুকুম দিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে। এটি প্রতিশোধের কোন বিষয় নয়। এটি ন্যায়ের কথা। এটি আইনের কথা। অন্যায় হলে তার বিচার হতে হয়। কার সম্পর্কে কী মনোভাব সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

তিনি বলেন, দল হিসেবে তারা যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। দেশের আইন সিদ্ধান্ত নেবে। সোজা কথায় অন্যায়কারীর বিচার হতে হবে। তো সেটি ব্যক্তি হোক, সেটি দলই হোক। যারা জুলুম করেছে তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে। সেটি দলও হতে পারে।

আপনি ব্যক্তিগতভাবে কী মনে করেন? আওয়ামী লীগের কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকা উচিত নাকি, না?— এই প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, আমার মনে হয় আপনার কোনও কোনও প্রশ্নের উত্তরে আমি মনে হয় বলেছিলাম যে- আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য। আমরা বিশ্বাস করি এবং বিভিন্ন সময় বলিও আমরা বিএনপি যারা করি আমাদের রাজনৈতিক সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করতে চাই- যে দলের ব্যক্তিরা বা যে দল মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম করে, মানুষ খুন করে, দেশের মানুষের অর্থসম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে- জনগণ তাদেরকে সমর্থন করতে পারে বলে আমি মনে করি না। জনগণ যদি সমর্থন না করে কোনও রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক সংগঠনকে তাদের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না। যেহেতু জনগণের শক্তিতে আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সিদ্ধান্তে আমরা বিশ্বাস করি। জনগণের সিদ্ধান্তের উপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক আমি মনে করি জনগণ।