তৃতীয় দিনে এসে জাতীয়ভাবে করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার হার প্রথম দিনের তুলনায় তিন গুণ ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার সারাদেশে টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৮২ জন।
এর আগে রোববার টিকাদান কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিন সারাদেশে টিকা নেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। আর গণটিকাদানের দ্বিতীয় দিনে সোমবার ৪৬ হাজার ৫০৯ জন টিকা নিয়েছেন।
মঙ্গলবারবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরে টিকা নিয়েছেন ১২ হাজার ৫১৭ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ৫৯২ জন এবং নারী ৩ হাজার ৯২৫ জন।
ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা বিভাগে টিকা নিয়েছেন ২৫ হাজার ২২০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ হাজার ৮৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৩ হাজার ৫৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ হাজার ১১৪ জন, রংপুর বিভাগে ১০ হাজার ২৩৭ জন, খুলনা বিভাগে ১১ হাজার ৩৭২ জন, বরিশাল বিভাগে ৪ হাজার ১৮১ জন এবং সিলেট বিভাগে টিকা নিয়েছেন ৮ হাজার ৫৫৯ জন।
টিকা গ্রহণকারী ৯৪ জনের সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন জ্বর, টিকা নেওয়ার স্থানে লাল হবার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগে রোববার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সারা দেশের এক হাজারের বেশি হাসপাতালে মহামারি করোনা সংক্রমণ রোধে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচির সূচনা হয়। রাজধানীর মহাখালীতে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিক্যালের টিকাকেন্দ্রে আগের দুদিনের চেয়ে ভিড় বেশি দেখা গেছে। তাদের মধ্যে বয়স্ক নাগরিকরাও রয়েছেন।
আবদুল মান্নান বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) নিজেরাই দেখছেন, আমার বলার কিছু নাই। মানুষের লাইন আছে, একের পর এক আসছে এবং টিকা দেওয়ার কোনো ঝামেলা নাই। অনেকের কাছে জানতে চেয়েছি, কিন্তু সবাই জানিয়েছেন, টিকা নেওয়ার পর কোনো অস্বস্তি তারা বোধ করছেন না।’
সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি মানুষ আসবে এবং সামগ্রিক পরিবেশ আরো বেশি ‘উৎসবমুখর’ হবে বলে আশা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বলেন, ইতিমধ্যে ছয় লাখের বেশি মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। আমরা চাইছি মানুষ নিরাপদে এবং আনন্দের সঙ্গে টিকা নেবে। ভিড় করার দরকার নেই। আমাদের সমস্ত সাপোর্ট এখানে দেওয়া আছে।
সবাইকে নিবন্ধন করে টিকা নিতে আসার আহ্বান জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, অস্থিরতার কোনো কারণ নেই। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে। আরও ভ্যাকসিন আমরা পাচ্ছি বিভিন্ন সোর্স থেকে। সব মিলিয়ে দেশে টিকা নিয়ে কোনো সঙ্কট হবে না। যতদিন জনগণ টিকা নিতে চাইবে, টিকার মূল্য যাই হোক, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সুরক্ষা দিতে মানসিকভাবে ও আর্থিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
যে টিকা বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিটি ভায়ালে থাকে ১০টি ডোজ। অর্থাৎ প্রতিটি ভায়াল খোলার পর ১০ জনকে টিকা দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো অপচয় হওয়ার সুযোগ থাকছে কি না- সেই প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘যেকোনো ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ‘ওয়াস্টেজ’ ধরেই হিসাবে করা হয়। তারপরও আমরা বলেছি দশের গুণিতক লোক না আসা পর্যন্ত ভায়াল না খুলতে। তবে আমরা হিসাবে করে দেখেছি, অপচয় ১০ শতাংশ এখনো হয়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, এ কেন্দ্রে সোমবার ৫০০ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরের আগেই সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।