চলতি বছরের শুরুতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় একমাত্র আসামি মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার এই রায় রায় ঘোষণা উপলক্ষে আসামি মজনুকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি আগেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ার আগে এই মামলার বিচার সম্পন্ন হওয়ায় রায় পূর্ববর্তী আইনেই হয়েছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে আসামি মজনুকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি আগেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
গত ১২ নভেম্বর এই মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। এদিন বিচারক মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৯ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন।
শুনানিতে আসামি মজনুর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালত সূত্র জানায়, ৫ নভেম্বর এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। গত ২৬ আগস্ট মজনুর বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন।
গত ১৬ মার্চ মামলায় মজনুর বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
মামলার অভিযোগপত্রে ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মোবাইলসহ মামলার আলামত হিসেবে ২০ ধরনের জিনিস জব্দ দেখানো হয়।
গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে গলফ ক্লাবসংলগ্ন স্থানে পৌঁছালে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন মজনু।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। পরে র্যাব-১ অভিযান চালিয়ে মজনুকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে আসামি মজনুকে বেলা ২টার দিকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসার পর উপস্থিত সবাইকে তিনি ‘ছেড়ে দেওয়ার’ আর্জি জানাতে থাকেন।
তাকে বলতে শোনা যায়, “আমারে ছাইড়া দেন, ঢাকায় আর আসমু না, বাড়ি চইলা যামু, আমারে ছাইড়া দেন ।”
পরে আদালত কক্ষে নেওয়ার পর চিৎকার করে তিনি বলতে থাকেন, “আমি পাগল মজনু । আইজকা ছাইড়া দ্যান। আমারে মারছে। কাশিমপুরে মশা। আমারে কোনো কিছু খাতি দ্যায় নাই।”
এক পর্যায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাজত পুলিশের এক সদস্যের ঘাড় চেপে ধরেন আসামি মজনু। এরপর কাঁদতে কাঁদতে কোর্ট হাজতের ওসির কাছে অভিযোগ জানাতে থাকেন এবং পুলিশ সদস্যদের গালাগাল শুরু করেন।
তার চিৎকার চেচামেচিতে বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে বিচারক সাংবাদিক ও উৎসুক আইনজীবীদের বাইরে বারান্দায় যেতে বলে শুধু জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের একজনকে এজলাসে থাকার অনুমতি দেন।