মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১ ও ২ নম্বর পিলারের ওপর পদ্মা সেতুর ৩৮তম স্প্যান বসানো হয়েছে। শনিবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে ‘ওয়ান-এ’ স্প্যানটি বসানো হয়। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ৫ হাজার ৭০০ মিটার (প্রায় পৌনে ৬ কিলোমিটার) দৃশ্যমান হলো।
সেতুসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলছেন, স্প্যানটি ১৬ নভেম্বর বসানোর পূর্ব–শিডিউল ছিল। তবে নির্ধারিত পিয়ার দুটির একটি ডাঙায়, অপরটি নদীতে ছিল। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খনন করে খুঁটি দুটির মাঝের স্থানটি স্প্যানবাহী ভাসমান ক্রেনের চলাচলের উপযোগী করা হয়। এরপর কারিগরি অন্যান্য বিষয় প্রস্তুত করতে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যায়। ৩৮তম স্প্যানটি বসানোর ফলে সম্পূর্ণ সেতু দৃশ্যমান হতে আর মাত্র ৩টি স্প্যান বাকি রইল। এ তিনটি স্প্যানও মাওয়া প্রান্তে বসবে।
সেতু কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ১ ও ২ নম্বর খুঁটির ওপর দিয়েই সেতুতে গাড়ি ও ট্রেন প্রবেশ করবে। মাটির গঠনপ্রকৃতি ও গভীরতার তারতম্যের কারণে মাওয়া প্রান্তে বেশ কয়েকটি খুঁটির নকশা জটিলতা দেখা দেয়। এ জন্য সবচেয়ে শুরুর স্প্যান হলেও এর কাজ দেরিতে শুরু হয়। কাজের গতি সচল রাখতে মাওয়া প্রান্ত থেকে না শুরু করে জাজিরা প্রান্ত থেকে স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৭টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫ হাজার ৫৫০ মিটার। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন কো. লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালে খুলে দেয়া হবে।