নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে নতুন বর্ষবরণ উৎসব পালনে বিশ্বব্যাপী আতশবাজি ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিউইয়র্ক, সিডনিসহ অনেক শহরে এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতি বছর নববর্ষের অনুষ্ঠানে সম্রাট নারুহিতো ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জনগণকে সরাসরি শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে জাপান। ভারতের দিল্লিসহ বেশ কয়েকটি শহরে বড় ধরনের জমায়েত এড়াতে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করে।
এদিকে ব্যতিক্রম শুধু নিউজিল্যান্ডে। কড়া লকডাউন ও সীমান্ত বন্ধের মাধ্যমে দেশকে করোনামুক্ত করতে পারা দেশটির নাগরিকেরা প্রতিবারের মতো এবারও স্বাভাবিকভাবেই বর্ষবরণ করার সুযোগ পায়।
অকল্যান্ডে পরিবারবর্গসহ বসবাসকারী বাংলাদেশী প্রকৌশলী এবং দ্য পদ্মা২৪.কম এর কলামিষ্ট মো: নাসির উদ্দিন মিয়া (সুমন) আমাদের জানান ” অকল্যান্ডে প্রতিবছর 0:00 মিনিটে পাঁচ মিনিটের এয়ার আতশবাজি প্রর্দশনী হয়, এবং আমরা ভাগ্যবান যে কোনও করোনার প্রকোপ আমাদের এখানে নেই তাই আমরা প্রত্যেকে গত রাতে স্কাই টাওয়ারের নতুন বছরের আতশবাজি
প্রদশর্নী পরিবারবর্গসহ উপভোগ করতে পারলাম।
অন্যদিকে, নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় ইউরোপে সুনির্দিষ্ট করে নতুন বছর উপলক্ষে সব ধরনের উদযাপন কর্মকাণ্ড বাতিল করা হয়েছে।
নিউ ইয়ার ইভ পার্টি বন্ধে ফ্রান্স এক লাখ পুলিশ মোতায়েন করেছে এবং মধ্য রাতে কারফিউ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে কারফিউ শুরু হয়। প্যারিসের মেট্রো লাইনগুলোর প্রায় অর্ধেকই বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ইংল্যান্ডে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে। বেশি আক্রান্ত হওয়া এলাকাগুলোর সব মানুষজনকে ঘরে বসেই নতুন বছর উদযাপনের পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। জনগণের প্রতি নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
নিষেধাজ্ঞার ফলে লন্ডনের রাস্তায় সুনসান নিরবতা লক্ষ্য করা গেছে।
সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে আয়ারল্যান্ড। দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। লোকজনকে ঘরে থাকতে বলা হয়। তিন মাইলের বেশি দূরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়।
করোনাভাইরাসের উৎস হিসেবে পরিচিত চীনের উহান শহরে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে বর্ষবরণ উদযাপন করা হয়। তবে বেইজিংয়ের আলোকবাতি অনুষ্ঠান বাতিল রাখা হয় এবার। ছবি : সংগৃহীত
জার্মানিতে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত লকডাউন চলছে। দেশটিতে আতশবাজির বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতালিতে কারফিউ জারি রয়েছে। বার, রেস্তোরাসহ বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ।
নেদারল্যান্ডসেও ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত লকডাউন চলমান রয়েছে। চার দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে তুরস্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের বহু অঙ্গরাজ্যে এবং শহরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নিউইয়র্কের জাঁকজমক টাইম স্কয়ার বল নামানো হবে তবে সর্বসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত অল্পকিছু লোক তাদের পরিবারের সদস্যসহ সেখানে ঢুকতে পারবেন। যাদেরকে ‘২০২০ সালের বীর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
সানফ্রান্সিসকো, লাস ভেগাসসহ অনেক শহরে আতশবাজি ফোটানোর কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, নতুন বছর উদযাপনে এগিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে আতশবাজির ঝলকানি দেখা গেলেও জনসমাগম নিষিদ্ধ ছিল। সিডনিতে পাঁচজনের বেশি একত্র হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। ফলে বেশিরভাগ মানুষ ঘরে বসে টিভিতেই আতশবাজির ঝলকানি উপভোগ করেন।
এ পর্যন্ত এই ভাইরাসে ১৮ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এক বছরে আক্রান্ত হয়েছে আট কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ।