দেশে করোনা ভ্যাকসিন উদ্বোধনের পর আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে মোট ৫৪১ জন টিকা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিসের পাঠানো তথ্য থেকে এ সংখ্যা জানা যায়।
এদিন টিকা গ্রহণকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মান্নান, তথ্য সচিব খাজা মিয়া এবং বিএসএসএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৩৮ জন চিকিৎসক ও ৩ জন নার্সসহ মোট ৫৮ জন টিকা নিয়েছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ৪৯ জন এবং নারী ৯ জন। এদিন এই হাসপাতালে সবার আগে টিকা গ্রহণ করেন অ্যানেস্থেশিয়া অ্যান্ড আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. চন্দন কুমার বণিক। তিনি বলেন, সকাল ১১টার দিকে ভ্যাকসিন নিয়েছি। প্রথম প্রথম অল্প সময়ের জন্য মাথা ঝিমঝিম ছিল। কিন্তু সেটাও ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ঠিক হয়ে যায়। তারপর থেকে একদম স্বাভাবিক আছি, সুস্থ আছি। কোনও সমস্যা নেই।
গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৬ জনকে টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয় দেশের করোনা ভ্যাকসিনের কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে এই হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ১০০ জন।এদের মধ্যে চিকিৎসক ৫০ জন, নার্স ১৩ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আছেন ৩৭ জন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন ১২০ জন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এখানে টিকা গ্রহণ করেন। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন। ঢামেকে প্রথম টিকা নেন ডা. ফরহাদ হাছান চৌধুরী মারুফ। এখানে ৫৪ জন চিকিৎসক,৭ জন নার্স এবং ৫৮ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী করোনার টিকা নিয়েছেন।
মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে চিকিৎসক ১২ জন,নার্স ৫ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আছেন ৪৮ জন। এদিন মুগদা হাসপাতালে প্রথম টিকা নেন ডা. নন্দিতা পাল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনার টিকা নিয়েছেন ১৯৮ জন। এদের মধ্যে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মান্নান, তথ্য সচিব খাজা মিয়া এবং বিএসএসএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া আছেন। বিএসএসএমইউ’র উপাচার্য প্রথম টিকা নেন। এছাড়া টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক ১৪২ জন, নার্স ৪ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ৪৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি বুথে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারটি বুথে, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারটি বুথে, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চারটি বুথে এবং কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে একটি বুথে টিকা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এদিন বেলা ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা দেওয়া হচ্ছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ’ টিকা নিচ্ছেন। একটা আনন্দঘন পরিবেশে টিকা দেওয়া কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনেকেই টিকা নিয়েছেন, অনেকেই এসেছেন। যে পরিবেশ, মনে হল যে ঈদের ভাব। যেভাবে ঈদ হয়, সেরকম আনন্দমুখর পরিবেশে টিকা নেওয়া হচ্ছে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন, তারা সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন এবং কারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা শোনা যায়নি।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।