প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে সদ্য যুক্ত হওয়া সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নতুন প্রথম ড্যাশ ৮-৪০০ ‘ধ্রুবতারা’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন তিনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে যে তিনটি ড্যাশ ৮-৪০০ প্লেন কেনা হয়েছে, তার মধ্যে ধ্রুবতারাই প্রথম বহরে যুক্ত হলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে সদ্য যুক্ত হওয়া সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত নতুন ড্যাশ ৮-৪০০ ‘ধ্রুবতারা’ চালুর ফলে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
তিনি বলেন, আমরা এই উপমহাদেশে বাস করি। আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানটা এত চমৎকার- একটা জায়গায় আমরা যদি শুধু আশপাশের দেশগুলোর সাথে একটা ভালো যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্যে সবদিক থেকে উন্নত হতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
উদ্বোধনকালে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব দুঃখ লাগছে, যেতে পারছি না, দেখতে পারছি না। করোনার সময় নিজে প্রতিটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারছি না, তাই ভার্চুয়াল অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেটা আমরা নিই সেটা সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নতমানের। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের একটাই, আমরা যখন এতগুলো বিমান কিনে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ করবো বা দেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগ করবো কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে উন্নতকরণের পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করি। ১৯৯৬ সালের ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুরবস্থা ছিল। আমরা উদ্যোগ নিয়ে আমূল পরিবর্তন করি। তখন বোর্ডিং ব্রিজ বা কিছুই ছিল না। সবকিছু্ই আওয়ামী লীগ সরকারের করা। এখন আমরা সেটাকে আরও উন্নত করে দিচ্ছি। থার্ড টার্মিনালও নির্মাণ হচ্ছে। তাছাড়া কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসেবে উন্নত করা হচ্ছে। সৈয়দপুর, সিলেট ও রাজশাহীসহ অন্যান্য বিমানবন্দরকে উন্নত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ও আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বিমানক্রয়সহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা করোনাভাইরাস এসে উলটপালট করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এতগুলো চমৎকার এয়ারলাইন্স কিনলাম কিন্তু করোনার কারণে সারাবিশ্বের সাথে বলতে গেলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। শুধু বাংলাদেশই না, বিশ্বব্যাপী এ সমস্যা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে ক্রয় করা তিনটি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজের মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ‘ধ্রুবতারা’। কানাডার প্রখ্যাত উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত, ৭৪ আসনবিশিষ্ট ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজটি পরিবেশবান্ধব এবং অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ।
কানাডার প্রখ্যাত প্লেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত ৭৪ আসন বিশিষ্ট ড্যাশ ৮-৪০০ প্লেনটি পরিবেশবান্ধব এবং অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ।
নতুন প্লেনটি যুক্ত হওয়ায় বিমান বহরে মোট প্লেন সংখ্যা বেড়ে ১৯টি হয়েছে। এগুলোর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুইটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং তিনটি ড্যাশ ৮-৪০০ প্লেন।