নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে “ইসলাম ও জাতির ঐতিহ্যবিরোধী” আখ্যা দিয়ে সেটি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, “এই কমিশন আল্লাহর বিধান, ইসলামী তাহজিব-তমদ্দুন ও জনমানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাই আমরা এই কমিশন এবং এর প্রতিবেদন গ্রহণ করি না।”
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “কমিশনের সদস্যরা যেসব সুপারিশ দিয়েছেন, তা সমাজকে অশান্ত ও বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে। যদি নারীদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজন থাকে, তবে সেটা দেশের ধর্মবিশ্বাসী সংখ্যাগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করে নয়। কমিশনে এমন একজন নারীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যিনি ইসলামি চিন্তাধারায় বিশ্বাসী—এটি পক্ষপাতদুষ্টতার প্রমাণ।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমরা আন্দোলনে যেতে চাই না, কিন্তু বাধ্য করা হলে রাস্তায় নামতে পিছপা হব না। এই কমিশন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়, কিন্তু সেটা সফল হবে না। এই রিপোর্ট জনগণের বিশ্বাস, ঐতিহ্য এবং কোরআনের শিক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে—তাই এটা টিকবে না, ভেসে যাবে।”
সেমিনারে ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “এই কমিশন মূলত ধর্মবিদ্বেষী একটি চক্রান্তের অংশ। অতীতেও এ ধরনের উদ্যোগ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, এবারও তাই হবে। যারা ধর্মহীন রাষ্ট্র গড়তে চায়, তারা শেষ পর্যন্ত সফল হবে না।”
খেলাফত মজলিসের মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “কমিশনের প্রস্তাবনার সারকথা হলো—ধর্ম নারীর বৈষম্যের উৎস। এটি ভয়ঙ্কর ও চরমভাবে বিভ্রান্তিকর। এ প্রস্তাবনার পেছনে পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গির ছায়া স্পষ্ট। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা প্রমাণ করে এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করিম আবরার।