তার মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সিডি চয়েসের কর্ণধার জহিরুল ইসলাম সোহেল। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ কিংবদন্তি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোহেল জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর জানে আলমকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। তবে তিনি ভাইরাসমুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এরপর তার নিউমোনিয়া দেখা দেয়। মঙ্গলবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
‘একটি গন্ধমের লাগিয়া’খ্যাত সংগীতশিল্পী জানে আলমের জন্ম মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে। পপ গানের চার স্থপতি ফিরোজ সাই, আজম খান, ফেরদৌস ওয়াহিদের সঙ্গে জানে আলমের নাম রয়েছে।
তার গানের শুরুটা স্বাধীনতার পর পরই। ‘বনমালী’ ছিল জানে আলমের প্রথম অ্যালবাম। এ অ্যালবামের মাধ্যমেই তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। মূলত পপশিল্পী আজম খানকেই তিনি অনুপ্রেরণা বা আদর্শ হিসেবে মানতেন। পপ গানের মধ্যে ফোক ধাঁচ ও অধ্যাত্মবাদ যুক্ত করে ভিন্ন ধারা তৈরি করেন তিনি।
জানে আলমের নিজের গাওয়া গানের সংখ্যা চার হাজারের মতো। তাছাড়া তার লেখা, সুর ও পরিচালনা করা গান রয়েছে প্রায় তিন হাজার। অ্যালবাম রয়েছে ৯০টির মতো। বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয় শিল্পীই গেয়েছেন তার গান।
জানে আলমের মৌলিক গানের তালিকায় রয়েছে -‘দয়াল বাবা কেবলা কাবা’, ‘স্কুল খুইলাছে রে মওলা’, ‘কালি ছাড়া কলমের মূল্য যে নাই’, ‘কৃষ্ণারও প্রেমের এত যে জ্বালা সখি আগে জানতাম না’, ‘আমার মন না চাইলেও ঘরও বান্ধিল কিশোরী’, ‘বন্ধুর বাড়ির জ্বালালি কইতুর’, ‘পাগলার মন নাচাইয়া পাগলি গেছে চলিয়া’ ইত্যাদি।
দেশ ছাড়াও জানে আলমের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল বিদেশের মাটিতে। বহু দেশে নিজের গান গেয়ে স্টেজ মাতিয়েছেন তিনি। একবার গান শুনিয়ে জাপানের রাজার মন জয় করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন জানে আলম। তার মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।