করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এক বছর বন্ধ থাকার পর ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও আর্থিক অনুদান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। এটা কষ্টকর ব্যাপার। তবে আমরা আশা করছি যে আগামী ৩০ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে সক্ষম হব।
“ইতিমধ্যে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যত শিক্ষক-কর্মচারী যারা আছে সকলকেই টিকা নিতে হবে। সেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি এবং এই টিকা সবাইকে দেওয়া হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ডব্লিউএইচও নির্দেশ মোতাবেক যে বয়স পর্যন্ত টিকা দেওয়া যাবে না তার উপরের বয়সের যারা সেই সব শিক্ষার্থীদেরকেও টিকা দেওয়া হবে। কাজেই আমরা সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা থাকুক সেটাই আমরা চাই।”
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দিয়ে বলেন, আমরা মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, আমরা সিভিল এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। অর্থাৎ সাবজেক্টগুলো আমরা দেখে দেখে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় যে এলাকায় যে ধরনের শিক্ষার খুব বেশি গুরুত্ব, আমরা সেভাবেই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করে দিচ্ছি। দিচ্ছি এজন্য যে সকলেই যেন শিক্ষাটা যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারে।
শিক্ষার্থীদের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। এ ক্ষেত্রে বিত্তশালীরাও এগিয়ে আসবেন। আমাদের শিক্ষাসহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডে সহায়তা করবেন বা নিজ নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহায়তা করবেন। নিজে যে প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছেন, সেটার উন্নয়নে ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসলেই তো হয়।’
বাংলাদেশ সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রান্তে এই সময় শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসরীন আফরোজসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে গত বছরের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে কওমি মাদ্রাসা খুললেও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও ‘ছুটি’ চলছে।
মহামারীর প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় এবং এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির কথা বিবেচনা করে গত ২৩ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার প্রস্তুতি নিতে বলেছিল।
তার মধ্যে বিভিন্ন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামলে সম্প্রতি জরুরি এক বৈঠক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় রোজার ঈদের পর ২৪ মে খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।