বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা ওমর ফারুক, আবু উবাইদাহ, প্রত্যাশা, দর্শক এবং তল্লাশী’র কমিশনিং অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা কারও সাথে যুদ্ধ করতে চাই না। জাতির পিতা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বলেছেন সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরীতা নয়। আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি।
“কিন্তু যদি বাংলাদেশ কখনও বহি:শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয় তাকে মোকাবেলা করবার মতো সক্ষমতা আমরা অর্জন করতে চাই। আমাদের সমুদ্রসীমা রক্ষার জন্য নৌবাহিনীকে শক্তিশালি করে গড়ে তুলছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সব সময় চেয়েছি যে, আমাদের এই সমুদ্রসীমা শুধু রক্ষা করা না, সমুদ্র সম্পদটাও যেন আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে আমরা অর্জন করতে পারি। তার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে এবং এইক্ষেত্রে আমরা ব্লু ইকোনমি এই ধারণাপত্র আমরা নিয়েছি এবং তার উপর আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
“কারণ আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে এই সমুদ্রের যে অপার সম্ভবনা রয়েছে, যে সমস্ত সমুদ্র সম্পদ আমাদের রয়েছে, সেই সম্পদ আহরণ করা এবং সেগুলোকে কাজে লাগানো এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
বাংলাদেশ নৌবাহিনী শান্তিকামী বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশবাসীর আস্থা ও প্রশংসা অর্জন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশেষ করে এবার করোনাভাইরাসের সময়ে আমাদের নৌবাহিনী যথাযথ ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তারা মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং মানুষকে সাহায্য করে থাকেন।”
নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও জানান সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, “আপনারা জানেন গণচীন থেকে তৈরি করা আধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত দুইটি ফ্রিগেট ও একটি অত্যাধুনিক করবেট এবং আমাদের নিজস্ব খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি দুইটি আধুনিক জরিপ জাহাজ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীর ক্ষমতাকে আরও জোরদার করবে, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
“নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আত্নবিশ্বাসকে বলীয়ান করে। আমরা হয়ত ভবিষ্যতে অন্য দেশের জন্যও জাহাজ তৈরি করতে পারব। সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করব।”
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
“যেহেতু শীতকাল আসছে, আবার সারাবিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। ইউরোপে ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় লকডাউন হয়েছে। আমাদের দেশের মানুষকে আমরা সুরক্ষিত রাখতে চাই। কাজেই এখন থেকেই সচেতন থাকতে হবে। সকলকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং চট্টগ্রামের নেভাল বার্থ-১ প্রান্তে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহিন ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।