প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি, বিশ্ব খুব শীঘ্রই কোভিড-১৯ এর কার্যকর ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে। এসব ভ্যাকসিন অবশ্যই সব দেশের জন্য সহজলভ্য করতে হবে, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে ধনী দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো উদারতা নিয়ে এগিয়ে আসার প্রয়োজন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আসেম (দ্য এশিয়া-ইউরোপ মিটিং) অর্থমন্ত্রীদের ১৪তম সভার উদ্বোধনী সেশনে ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনার কারণে ভার্চুয়ালি আয়োজিত এবারের সভার আয়োজক বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জার্মানি, স্পেন, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, চীন, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ আসেমভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীসহ বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফের প্রতিনিধিরা এ সভায় অংশ নেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক্ষেত্রে ধনী দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবিএস) ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারী সঙ্কট মোকাবেলায় সুসমন্বিত রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।
কোভিড-১৯ মহামারী সঙ্কট মোকাবেলায় সুসমন্বিত রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বে বহুমাত্রিক সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এটিকে বৈশ্বিকভাবেই মোকাবেলা করা উচিত। এ সঙ্কট মোকাবেলায় আমাদের একটি সুসমন্বিত রোডম্যাপ প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বেইল আউটের হাত থেকে রক্ষার জন্য রাজস্ব প্রণোদনা, কনসেশনাল ফাইন্যান্স এবং ঋণ উপশম সুবিধা দিতে জি-৭, জি-২০, ওইসিডি দেশগুলো, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ডিউটি-ফ্রি ও কোটা-ফ্রি বাজার সুবিধা এবং প্রযুক্তি সহায়তায় উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, তার সরকার এখন পর্যন্ত অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরের পাশাপাশি আমাদের সমাজের বিভিন্ন খাতকে সহায়তা করার জন্য ১৪ দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতুল্য ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই সহায়তা প্যাকেজের পরিমাণ জিডিপির ৪ দশমিক ৩ শতাংশের সমান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক মাসব্যাপী মহামারীর প্রাথমিক ধাক্কা সামলানোর পর আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। রফতানি, প্রবাস আয়, কৃষি উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রবণতাই এটি নির্দেশ করে যে, আমাদের অর্থনীতি এখন টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে পুনরায় ফিরে আসছে।