ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষেকমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে । দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত ১৮টি ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
গত রবিবার সন্ধ্যা এবং সোমবার সকালে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাবুর বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায় উপজেলা যুবলীগের কমিটি নিয়ে দুটি অংশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রবরোধ চলে আসছে। উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলেন চতুল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান। মো. রফিকুল ইসলামকে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক করা হয়। এ নিয়ে ওই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে।
সেলিমুজ্জামান ও রফিক দুজনেই চতুল ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দা। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে তারা দুজনেই সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত রবিবারসন্ধ্যায় উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাবুরবাজারে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চতুল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং যুবলীগ নেতা শরীফ মো. সেলিমুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী সভা হওয়ার কথা ছিল। এ সময় অপর এক সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা মো. রফিকুল ইসলামের সমর্থকরা ওই সভা বানচাল করার চেষ্টা করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালীন বাবুরবাজারে তিনটি দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে রফিকের সমর্থক হাসমত শেখের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া পোয়াইল গ্রামের রবিউল মোল্লা, আবজাল মোল্লা, উজ্বল শেখ, জামাল মাতুব্বরসহ বাকিদের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যার ঘটনার জের ধরে সোমবার সকালে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রফিকের সমর্থকরা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামের বাড়িসহ প্রায় ১৮টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।এ হোমলার সময় মিন্টু মোল্লা নামে একজন আহত হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারি পুলিশ সুপার ( মধুখালী সার্কেল) আনিসুজ্জামান। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, আমার একটি নির্বাচনী সভা এবং সভা শেষে গণসংযোগ হওয়ার কথা ছিল। অথচ আমার প্রতিপক্ষের লোকেরা সহিংস উপায় অবলম্বন করে আমার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী বানচাল করেছে। আমার লোকেরা বাধা দিলে তাদের বেধড়ক মারপিট করেছে এবং ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত রবিবার ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি তখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে ছিলাম। তিনি বলেন, তার জানা মতে একটি হত্যা মামলার আসামি করা নিয়ে সেলিমুজ্জামানের সমর্থকদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারনে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আলম জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। এ ঘটনায়সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ১জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বিবাদমান দুই পক্ষের কোন পক্ষই থানায় কোন অভিযোগ করেনি। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।