যথাযথ মর্যাদা বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে ফরিদপুরে ৪৯তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসাবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উৎলন ও ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা হয় । এর পর সকাল ৮টায় শহরের গোয়ালচামটে মুক্তিযুদ্ধের সৃতিস্তম্ভে শহীদদের আত্মার শান্তী কামনা করে মোনাজাত ,এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়র খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে সৃতিস্তম্ভে পুস্পমালা অর্পন করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার পুস্পমালা অর্পন করেন।
এরপর একে একে পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান ,হাইওয়ে পুলিশ সুপার ও নৌ পুলিশ সুপার,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার,মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,পৗরসভার মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু,জেলা আওয়ামীলীগ ও এর অংগসংগঠন,জেলা বিএনপি ও এর অংগসংগঠন,জেলা জাতীয় পার্টি,জাকের পার্টি জাসদ,কমিনিস্ট পার্টি,বিভিন্ন শিক্ষা,সামাজিক,পেশাজীবী সংগঠন ও সর্বস্তরে জনগন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর সকাল ৯টায় স্বাধীনতা যুদ্ধ নিহত শহীদদের গনকবর শহীদদের আত্মার শান্তী কামনা করে মোনাজাত ,এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়র খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে পুস্পমালা অর্পন করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান ,হাইওয়ে পুলিশ সুপার ও নৌ পুলিশ সুপার,মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,পৗরসভার মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু পুস্পমালা অর্পন করেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে নয় টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত মুজিববর্ষ মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়।
এই ক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ সময় শত সহস্র কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এতে দেশ ও প্রবাস থেকে ১ লক্ষ ২১ হাজার লোক অংশগ্রহনের জন্য রেজিস্টেশন করে। এছাড়া সহস্রাধিক মানুষ সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনা ভাইরাসের এর প্রাদুর্ভাবের কারনে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের পরিকল্পনায় জেলায় বিজয় দিবস উদযাপনে শত সহস্র কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এতে অনলাইনের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থা করেন জেলা প্রশাসন। এছাড়া ওয়েবসাইট, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশে এবং প্রবাসে অবস্থানরত ফরিদপুরের সকল নাগরিককে তাঁর নিজ নিজ অবস্থান থেকে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানান জেলা প্রশাসন। সেখানে ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে এক লক্ষ মানুষ রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করেন এবং মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ১ লক্ষ ২১ হাজার মানুষ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশন শেষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। তিনি বলেন, আজ ১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাঙ্গালী জাতির সর্বাধিক গৌরব অর্জনের দিন। বিজয়ের এই দিনে আমি স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারানো মা-বোনকে। তিনি এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনায় অংশগ্রহণকৃত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপণ করেন। এরপর শান্তির প্রতিক কবুতর ও বেলুন উড়ানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাদ যোহর সকল মসজিদে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও গুজব বিরোধী কার্যক্রমের বিষয়ে জনমত সৃষ্টির জন্য আলোচনা ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে আলোচনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ-আত্মদানকারী-যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিভিন্ন মসজিদে দোয়- মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
দিনব্যাপী শেখ রাসেল শিশুপাকসহ অন্যান্য সকল শিশু পার্কে বিনা টিকিটে শিশুদের জন্য শিশুপার্ক সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা এবং প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া বিজয়কে বরণ করে নিতেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের নবনির্মিত কার্যালয়, জেলা পাসপোর্ট অফিস, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, গণপূর্ত বিল্ডিং, জেলা কারাগার, কবি জসিম উদ্দিন হল, ফরিদপুর জেলা পরিষদ, শেখ জামাল স্টেডিয়াম, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, ফরিদপুর পৌরসভা ও জজ কোর্ট সহ সকল সরকারি দফতরের ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মোড়ানো হয়েছে লাল সবুজের চাদরে।