ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ-মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিন রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জসহ দেশের প্রত্যেকটি জেলা এবং উপজেলায় বিক্ষোভ করেছে জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বিভিন্ন বাম সংগঠন।
রাজধানীতে সোমবার ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাথীরা স্লোগানে স্লোগানে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। বিশ্বব্যাপী ডাকা কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এদিন চলে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি।
সকাল ১০টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট, কুরিল বিশ্বরোড নতুনবাজারসহ ঢাকার আরও কিছু জায়গায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বিকালেও বিক্ষোভ ও মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বাড্ডায় পথে নামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা দ্রুত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি তুলে স্লোগান দেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করে একদল শিক্ষার্থী। নতুন বাজারের কাছে মার্কিন দূতাবাসের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন৷
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও গুলশান এলকায় বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মিরপুরসহ একাধিক স্থানে মিছিল-সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আর গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় ওই এলাকার চারদিকে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে। সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন ফটোকার্ড ও ব্যানার নিয়ে মিছিল নিয়ে সমবেত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
এসব সমাবেশ থেকে গাজায় ইসরোয়েলি হামলা ও গণহত্যা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা, গাজায় গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে মুসলিমবিশ্ব ও জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
মূলত, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর থেকে আবারও অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিনই যেন বাড়ছে হামলার তীব্রতা। দখলদার বাহিনীর নির্বিচার এসব হামলায় গাজায় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।
এ অবস্থায় গত ৬ এপ্রিল গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনি ন্যাশনাল এবং ইসলামিক ফোর্সেস গ্রুপ। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূত্রপাতের পরপরই ইয়াসির আরাফাতের অনুমোদনে এবং মারওয়ান বারগুতির নেতৃত্বে গঠিত একটি জোট হলো এই ফিলিস্তিনি ন্যাশনাল এবং ইসলামিক ফোর্সেস গ্রুপ।
তাদের বৈশ্বিক এ ধর্মঘটের ডাকে সাড়া দিয়েই আজ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।