ঢাকা ০৪:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফ পুড়ে যাওয়ায় চারুকলার বিবৃতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য নির্মিত ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার ভোরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চারুকলা অনুষদ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের অংশ হিসেবে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের যৌথ প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রতীকী মোটিফ তৈরি করা হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ গেট সংলগ্ন প্যান্ডেলে রাখা ছিল ২০ ফুট উচ্চতার একটি প্রতীকী দানবীয় মুখাবয়ব, যার শিরোনাম ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’।

ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে প্যান্ডেলে আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রধান মোটিফ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায় এবং তার পাশেই থাকা ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফটিও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ঘটনার সময় দায়িত্বরত মোবাইল টিম ফজরের নামাজে ছিলেন। সেই সুযোগে অজ্ঞাত কেউ এই কাজটি করেছে বলে মনে হচ্ছে।”

এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল — ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

এ প্রতিপাদ্যের অংশ হিসেবেই প্রধান মোটিফ হিসেবে তৈরি করা হয় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’।

দাঁতাল মুখ, বিশাল নাক, ভয়াল চোখ আর মাথায় খাড়া শিংসহ এই ভীতিকর চেহারার নারীর মুখাবয়ব অনেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন—যদিও নির্মাতারা একে প্রতীকী বলেই দাবি করেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। আগুন নিছক দুর্ঘটনা, না-কি পরিকল্পিত হামলা—তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত কমিটি।

চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে এই শিল্পকর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলা হয়েছে, সৃজনশীলতার বিরুদ্ধে এ ধরনের হামলা নিন্দনীয়, এবং তারা দোষীদের খুঁজে বের করার বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।

Tag :

‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফ পুড়ে যাওয়ায় চারুকলার বিবৃতি

Update Time : ০৫:৪৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য নির্মিত ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার ভোরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চারুকলা অনুষদ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের অংশ হিসেবে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের যৌথ প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রতীকী মোটিফ তৈরি করা হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ গেট সংলগ্ন প্যান্ডেলে রাখা ছিল ২০ ফুট উচ্চতার একটি প্রতীকী দানবীয় মুখাবয়ব, যার শিরোনাম ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’।

ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে প্যান্ডেলে আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রধান মোটিফ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায় এবং তার পাশেই থাকা ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফটিও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ঘটনার সময় দায়িত্বরত মোবাইল টিম ফজরের নামাজে ছিলেন। সেই সুযোগে অজ্ঞাত কেউ এই কাজটি করেছে বলে মনে হচ্ছে।”

এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল — ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

এ প্রতিপাদ্যের অংশ হিসেবেই প্রধান মোটিফ হিসেবে তৈরি করা হয় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’।

দাঁতাল মুখ, বিশাল নাক, ভয়াল চোখ আর মাথায় খাড়া শিংসহ এই ভীতিকর চেহারার নারীর মুখাবয়ব অনেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন—যদিও নির্মাতারা একে প্রতীকী বলেই দাবি করেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। আগুন নিছক দুর্ঘটনা, না-কি পরিকল্পিত হামলা—তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত কমিটি।

চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে এই শিল্পকর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলা হয়েছে, সৃজনশীলতার বিরুদ্ধে এ ধরনের হামলা নিন্দনীয়, এবং তারা দোষীদের খুঁজে বের করার বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।