ঢাকা ০৩:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
বাংলাদেশি রোগী বয়কট না করার সিদ্ধান্ত ভারতের চিকিৎসকদের ক্ষমতায় আসার মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ক্ষমতাচ্যুত হচ্ছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে গাজা উপত্যকার ‘সেফ জোন’ লক্ষ্য করে আবারও বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, ‘পুড়ে ছাই’ নারী-শিশুসহ ২০ জন পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার অভিযোগে তিনজনকে আটক এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ আজকের নামাজের সময়সূচি ৫ ডিসেম্বর আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা যড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা এখনো সজাগ আছি, ঐক্যবদ্ধ আছি: প্রধান উপদেষ্টা ‘আমাদের এখানে ভয়ঙ্কর একটা কাণ্ড ঘটে গিয়েছে, এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে’ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ আমরা সবাই: ডা. শফিকুর রহমান

বই উৎসবের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০
  • ২০৫ Time View

দেশের সব স্কুলশিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে বই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১টা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বই বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র মিলনায়তনে মন্ত্রী ও সচিবদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। আগামীকাল বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে মোট ১২দিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী সময়মতো বই বিতরণের ব্যবস্থা করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঠ কার্যক্রম যেন  ঠিকমতো চলে সেজন্য আমরা করোনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি।‘

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে স্কুল শিক্ষার্থীরা। তারা যেন নতুন বইটা পায়, নতুন বইয়ে নিজের নামটা লিখতে পারে, নতুন বইয়ের আনন্দটা পায় সেই চেষ্টা আমরা করেছি।’

করোনোর কারণে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, স্কুল খোলা সম্ভব না হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান চলবে।  ভর্তির ব্যবস্থাটাও অনলাইনে চলবে।

করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই এসব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। এবার ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৫ কোটি বই।

অন্যদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পেছনের (ব্যাক পেজ) মলাটে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ সংযোজন করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য দুই কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১ টি বই, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ছয় কোটি ৯৬ লাখ, ৯৭ হাজার ৩৭৪ টি। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধুমাত্র বাংলা বইটি পাবে। এবছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার কপি বই মুদ্রণ করার কাজ চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাকে মানসম্মত করার লক্ষ্যে এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে ‘বই উৎসব’ করে আসছে। এবার বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে বই উৎসব করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের গন্ধ পাবে। গত ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর (২০২০ সাল) পর্যন্ত এই ১০ বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ৩৩১ কোটি ৪৭ লাখ বই সারাদেশে বিতরণ করা হয়েছে।

Tag :
জনপ্রিয়

বাংলাদেশি রোগী বয়কট না করার সিদ্ধান্ত ভারতের চিকিৎসকদের

বই উৎসবের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ০৬:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

দেশের সব স্কুলশিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে বই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১টা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বই বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র মিলনায়তনে মন্ত্রী ও সচিবদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। আগামীকাল বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে মোট ১২দিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী সময়মতো বই বিতরণের ব্যবস্থা করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঠ কার্যক্রম যেন  ঠিকমতো চলে সেজন্য আমরা করোনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি।‘

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে স্কুল শিক্ষার্থীরা। তারা যেন নতুন বইটা পায়, নতুন বইয়ে নিজের নামটা লিখতে পারে, নতুন বইয়ের আনন্দটা পায় সেই চেষ্টা আমরা করেছি।’

করোনোর কারণে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, স্কুল খোলা সম্ভব না হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান চলবে।  ভর্তির ব্যবস্থাটাও অনলাইনে চলবে।

করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই এসব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। এবার ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৫ কোটি বই।

অন্যদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পেছনের (ব্যাক পেজ) মলাটে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ সংযোজন করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য দুই কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১ টি বই, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ছয় কোটি ৯৬ লাখ, ৯৭ হাজার ৩৭৪ টি। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধুমাত্র বাংলা বইটি পাবে। এবছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার কপি বই মুদ্রণ করার কাজ চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাকে মানসম্মত করার লক্ষ্যে এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে ‘বই উৎসব’ করে আসছে। এবার বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে বই উৎসব করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের গন্ধ পাবে। গত ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর (২০২০ সাল) পর্যন্ত এই ১০ বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ৩৩১ কোটি ৪৭ লাখ বই সারাদেশে বিতরণ করা হয়েছে।