ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
বাংলাদেশ-ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আর্থিক সহায়তা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র কারো রক্তচক্ষু বা ধমকের কারণে কোনো কাজ করার প্রয়োজন নেই: ডিসিদের প্রধান উপদেষ্টা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি দূরভিসন্ধিমূলক: রিজভী বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত দুপুর ১২টায় ডিসি সম্মেলন শুরু আজ, উঠছে ৩৫৪ প্রস্তাব এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ আজকের নামাজের সময়সূচি ১৬ ফেব্রুয়ারি আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা যতদ্রুত সম্ভব আমরা সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্ট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে চাই: ড. আলী রিয়াজ পরিষ্কারভাবে বলেছি জাতীয় নির্বাচন আগে, তারপর স্থানীয়: ফখরুল

বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে দশটা শপথ নেবেন জো বাইডেন

করোনা ভাইরাসে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি, মহামারীর ধাক্কায় নাজুক অর্থনীতি, ভেঙে পড়া পররাষ্ট্র নীতি, ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের চূড়ান্ত অসহযোগিতা আর সহিংসতার আশঙ্কার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথের মঞ্চে উঠতে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন।

আর কিছুক্ষণ পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের অভিষেক। বাইডেনের আগে শপথ নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গেই জো বাইডেনের প্রেসিডেন্টের কার্যকাল শুরু হয়ে যাবে।  মার্কিন আইনসভা ক্যাপিটল ভবনের প্রাঙ্গনে এই অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় এই অভিষেক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

শপথ অনুষ্ঠানে জো বাইডেন বলবেন, আমি একনিষ্ঠভাবে শপথ গ্রহণ করছি যে, আমি বিশ্বস্ততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের দায়িত্ব সম্পাদন করব, এবং আমি আমার সামর্থের সবটুকু দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সুরক্ষা, সংরক্ষণ ও প্রতিপালন করবো।
এই শব্দগুলো উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গেই জো বাইডেন আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্টে পরিণত হবেন এবং তার অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হবে। অবশ্যই এখানেই আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে না, এর পরেই থাকবে উদযাপন। কমালা হ্যারিসও শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্টে পরিণত হবেন এবং প্রথা অনুযায়ী এটি ঘটে প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার ঠিক আগে। সকাল ১১টায়

আইন অনুযায়ী, অভিষেকের দিনটি হলো ২০ জানুয়ারি। সাধারণত উদ্বোধনী বক্তব্যটি দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল সাড়ে এগারোটায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে দশটা), আর তার ঠিক আধঘণ্টা পর মধ্যাহ্নের সময় জো বাইডেন এবং কমালা হ্যারিস শপথ নেবেন। তারপর হোয়াইট হাউজে চলে যাবেন জো বাইডেন, যেটা হতে যাচ্ছে তার আগামী চার বছরের কর্মস্থল ও বাসস্থান।

অভিষেক উপলক্ষ্যে মার্কিন কর্মকর্তারা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন, শহরের বেশিরভাগ অংশেই চলাচল আটকে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা পরিকল্পনার নেতৃত্বে আছে সিক্রেট সার্ভিস, যাদের সাথে যোগ হয়েছে ১৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য। আর অতিরিক্ত হিসেবে হাজার হাজার পুলিশ অফিসারতো থাকছেনই।  ওয়াশিংটন ডিসিতে আগে থেকেই জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে, যা বলবৎ থাকবে অভিষেক শেষ হওয়া পর্যন্ত।

সিক্রেট সার্ভিসের পক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থার নেতৃত্বে রয়েছেন এজেন্ট ম্যাট মিলার। তিনি সাংবাদিকদের গত শুক্রবার বলেছিলেন যে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে এই অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা করা হয়েছে।  বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের সময় সশরীরে উপস্থিত থাকার রেওয়াজ থাকলেও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম অভিষেক অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন না।

সাধারণত প্রেসিডেন্টের অভিষেক হয়ে থাকে আনন্দ-উল্লাসমুখর পরিবেশেই। হাজার হাজার মানুষ অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন করতে ওয়াশিংটনে জড়ো হয়। কিন্তু গত ৬ জানুয়ারিতে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের ভয়াবহ হামলার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেদিকেই এবার বেশি মনোযোগ দিতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। সে কারণে ওয়াশিংটন ডিসির গণতন্ত্রের যে তাজ একসময় বিশ্বব্যাপী ছিল প্রশংসিত, তা-ই পরিণত হয়েছে পুলিশের রাজ্যে। নির্বিঘ্নে বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষ ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর নিশ্চিত করতে চেয়েছে।

এবার ডিসিতে মোতায়েন করা হয় ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা, বন্ধ করা হয় বেশকিছু রাস্তা, উঁচু সব বেষ্টনী দিয়ে সুরক্ষিত করা হয় ক্যাপিটল ভবন, চলাফেরাতেও আরোপ করা হয় কড়াকড়ি। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একেবারে শেষ দিনগুলোতে এসে ওয়াশিংটনে যত সেনা সমাবেশ দেখা গেছে, তা আফগানিস্তান, ইরাক এমনকি সিরিয়ায় থাকা মোট মার্কিন সেনা সমাবেশের চেয়েও বেশি।

সহিংস বিক্ষোভের শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের সবগুলোতে এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায় বিশেষ সতর্কতাও জারি হয়; আট রাজ্য থেকে পুলিশ ওয়াশিংটন ডিসির নিরাপত্তা রক্ষায় তৎপর হয়েছে; এ যেন বিদেশি কোনো শত্রুর হামলার মুখে আছে দেশ!

অথচ হুমকি বিরাজ করেছে দেশের ভেতর থেকেই, প্রেসিডেন্টের শপথ ঘিরে এমন পরিস্থিতি ইতিহাসে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আর এ পরিস্থিতিই জো বাইডেন ক্ষমতা নেওয়ার আগ মুহূর্তেও যুক্তরাষ্ট্রের সামনে নানা বিপদের পট প্রস্তুত করেছে, যেগুলো মোকাবেলা করে চলার কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগুতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট হতে যাওয়া বাইডেনকে।

Tag :

বাংলাদেশ-ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আর্থিক সহায়তা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে দশটা শপথ নেবেন জো বাইডেন

Update Time : ০৪:০৬:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১

করোনা ভাইরাসে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি, মহামারীর ধাক্কায় নাজুক অর্থনীতি, ভেঙে পড়া পররাষ্ট্র নীতি, ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের চূড়ান্ত অসহযোগিতা আর সহিংসতার আশঙ্কার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথের মঞ্চে উঠতে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন।

আর কিছুক্ষণ পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের অভিষেক। বাইডেনের আগে শপথ নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গেই জো বাইডেনের প্রেসিডেন্টের কার্যকাল শুরু হয়ে যাবে।  মার্কিন আইনসভা ক্যাপিটল ভবনের প্রাঙ্গনে এই অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় এই অভিষেক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

শপথ অনুষ্ঠানে জো বাইডেন বলবেন, আমি একনিষ্ঠভাবে শপথ গ্রহণ করছি যে, আমি বিশ্বস্ততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের দায়িত্ব সম্পাদন করব, এবং আমি আমার সামর্থের সবটুকু দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সুরক্ষা, সংরক্ষণ ও প্রতিপালন করবো।
এই শব্দগুলো উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গেই জো বাইডেন আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্টে পরিণত হবেন এবং তার অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হবে। অবশ্যই এখানেই আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে না, এর পরেই থাকবে উদযাপন। কমালা হ্যারিসও শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্টে পরিণত হবেন এবং প্রথা অনুযায়ী এটি ঘটে প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার ঠিক আগে। সকাল ১১টায়

আইন অনুযায়ী, অভিষেকের দিনটি হলো ২০ জানুয়ারি। সাধারণত উদ্বোধনী বক্তব্যটি দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল সাড়ে এগারোটায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে দশটা), আর তার ঠিক আধঘণ্টা পর মধ্যাহ্নের সময় জো বাইডেন এবং কমালা হ্যারিস শপথ নেবেন। তারপর হোয়াইট হাউজে চলে যাবেন জো বাইডেন, যেটা হতে যাচ্ছে তার আগামী চার বছরের কর্মস্থল ও বাসস্থান।

অভিষেক উপলক্ষ্যে মার্কিন কর্মকর্তারা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন, শহরের বেশিরভাগ অংশেই চলাচল আটকে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা পরিকল্পনার নেতৃত্বে আছে সিক্রেট সার্ভিস, যাদের সাথে যোগ হয়েছে ১৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য। আর অতিরিক্ত হিসেবে হাজার হাজার পুলিশ অফিসারতো থাকছেনই।  ওয়াশিংটন ডিসিতে আগে থেকেই জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে, যা বলবৎ থাকবে অভিষেক শেষ হওয়া পর্যন্ত।

সিক্রেট সার্ভিসের পক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থার নেতৃত্বে রয়েছেন এজেন্ট ম্যাট মিলার। তিনি সাংবাদিকদের গত শুক্রবার বলেছিলেন যে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে এই অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা করা হয়েছে।  বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের সময় সশরীরে উপস্থিত থাকার রেওয়াজ থাকলেও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম অভিষেক অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছেন না।

সাধারণত প্রেসিডেন্টের অভিষেক হয়ে থাকে আনন্দ-উল্লাসমুখর পরিবেশেই। হাজার হাজার মানুষ অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন করতে ওয়াশিংটনে জড়ো হয়। কিন্তু গত ৬ জানুয়ারিতে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের ভয়াবহ হামলার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেদিকেই এবার বেশি মনোযোগ দিতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। সে কারণে ওয়াশিংটন ডিসির গণতন্ত্রের যে তাজ একসময় বিশ্বব্যাপী ছিল প্রশংসিত, তা-ই পরিণত হয়েছে পুলিশের রাজ্যে। নির্বিঘ্নে বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষ ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর নিশ্চিত করতে চেয়েছে।

এবার ডিসিতে মোতায়েন করা হয় ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা, বন্ধ করা হয় বেশকিছু রাস্তা, উঁচু সব বেষ্টনী দিয়ে সুরক্ষিত করা হয় ক্যাপিটল ভবন, চলাফেরাতেও আরোপ করা হয় কড়াকড়ি। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একেবারে শেষ দিনগুলোতে এসে ওয়াশিংটনে যত সেনা সমাবেশ দেখা গেছে, তা আফগানিস্তান, ইরাক এমনকি সিরিয়ায় থাকা মোট মার্কিন সেনা সমাবেশের চেয়েও বেশি।

সহিংস বিক্ষোভের শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের সবগুলোতে এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায় বিশেষ সতর্কতাও জারি হয়; আট রাজ্য থেকে পুলিশ ওয়াশিংটন ডিসির নিরাপত্তা রক্ষায় তৎপর হয়েছে; এ যেন বিদেশি কোনো শত্রুর হামলার মুখে আছে দেশ!

অথচ হুমকি বিরাজ করেছে দেশের ভেতর থেকেই, প্রেসিডেন্টের শপথ ঘিরে এমন পরিস্থিতি ইতিহাসে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আর এ পরিস্থিতিই জো বাইডেন ক্ষমতা নেওয়ার আগ মুহূর্তেও যুক্তরাষ্ট্রের সামনে নানা বিপদের পট প্রস্তুত করেছে, যেগুলো মোকাবেলা করে চলার কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগুতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রেসিডেন্ট হতে যাওয়া বাইডেনকে।