কর্মকর্তাদের কথায় যে ইংগিত মিলেছিল, তা আর ঘটল না; এনবিআর চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দিলেন, আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য ৩০ নভেম্বরই শেষ দিন, সময় আর বাড়ছে না।
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান (এনবিআর) আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তবে আবেদন করে সময় নিতে পারবেন করদাতারা। এক্ষেত্রে যে জরিমানা হবে তা আরোপ করার ক্ষেত্রে কর কমিশনারদের নমনীয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এনবিআর।
রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান এ কথা বলেছেন। এক্ষেত্রে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।
চলতি কর বছরের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫টি রিটার্ন দাখিল হয়েছে। এতে দুই হাজার ৩৮৭ কোটি টাকার কর জমা পড়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯৩ কোটি টাকা কম। তবে এ বছর মোট রিটার্ন দাখিল হয়েছে বেশি। গত বছরের ২৬ নভেম্বব পর্যন্ত ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৬টি রিটার্ন দাখিল করেছিলেন করদাতারা। গত জুন শেষে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৭ জন।
প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরই বিনা জরিমানায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন থাকে। অন্যবছর নাগরিকদের কর দিতে উৎসাহিত করতে কর মেলার আয়োজন করা হলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার সে আয়োজন হয়নি।
শীতের আগে আগে ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় এবং দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়ে এনবিআরে চিঠি দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, আয়কর আইনজীবীসহ পেশাজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন।
কিন্তু বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশে রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর সরাসরি কোনো সুযোগ নেই। ফলে মহামারীর মধ্যে কীভাবে করদাতাদের একটু স্বস্তি দেওয়া যায়, সেই পথ খুঁজতে শুরু করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এই প্রেক্ষাপটে রিটার্ন জমার সময় বাড়ানো হতে পারে বলে শনিবার ইংগিত এসেছিল এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তারা কথায়। রোববার এনবিআর চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলেও তারা আভাস দিয়েছিলেন।
সে ঘোষণা না এলেও রিটার্ন দিতে বিলম্বের যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে জরিমানা মওকুফ করা হবে বলে জানিয়েছেন আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে যারা আয়কর রিটার্ন দিতে পারবেন না, তারা সংশ্লিষ্ট কর অফিসে আবেদন করতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা না দেওয়ার যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে তার জরিমানা মওকুফ করা হবে। কমিশনারের কাছে যদি কারণ যৌক্তিক মনে না হয়, তবে তাকে জরিমানা দিতে হবে।