কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক প্রায় ৬শ’ রোহিঙ্গা নিয়ে দ্বিতীয় দফায় নোয়াখালীর ভাসনচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে ১৩টি বাস।
সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয় এই রোহিঙ্গারা।
তবে প্রথম দফার মতো এবারও রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আজ সকালে ডিগ্রি কলেজ মাঠে দেখা যায়, বিশাল আকারের প্যান্ডেল, অর্ধশতাধিক বড় গাড়ি দাঁড় করানো আছে। সেখানে পুলিশ ও র্যাবের বেশ কিছু গাড়ি দাঁড় করানো। ছোট ছোট বাসে করে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের মাঠে আনা হয়। পরে রোহিঙ্গাদের খাবার দিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। এ সময় পুলিশ ও মেডিকেল টিমের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, হাজারখানেক রোহিঙ্গা আজ ভাসানচরে যেতে পারে। আজ প্রথম দফায় ১৩টি বাসে সাড়ে চার শর বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। প্রতিটি বাসে নারী–শিশুসহ ৩৫ জন করে যাত্রী আছে।
সোমবার বেলা ১২টায় দ্বিতীয় বারের মতো প্রথম দফায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে ১৩টি বাস উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যেতে দেখেছেন স্থানীয়রা।
উখিয়ার স্থানীয়রা জানান, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস এলাকাজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনী। সেখানে সাধারণ মানুষের চলা চলেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
পরিবার নিয়ে ভাসাচরে উদ্দেশে যাত্রাকালে টেকনাফ শালাপুরের মো. জাহেদ হোসাইন বলেন, কেউ আমাদের জোর করেনি। নিজেদের ইচ্ছায় আমরা পুরো পরিববার ভাসানচরে চলে যাচ্ছি। তাছাড়া ভাসানচরে যারা আছে তারা অনেক ভাল আছেন বলে ফোনে জানিয়েছিল। তাই আমরা উন্নত জীবনের আশায় সেখানে যাত্রা দিচ্ছি।
টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরের হেড মাঝি আবুল কালাম জানান, তার শিবির থেকে ২৫ পরিবারের ১০০ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে উদ্দেশে উখিয়া রওনা দিয়েছে। সোমবার সেখান থেকে চট্রগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। মঙ্গলবার তারার সকালে ভাসানচর পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এর আগে ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে স্থানান্তরের প্রথম ধাপে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ ভাসানচরে পৌঁছায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা। আগেরদিন ভাসানচরে যেতে আগ্রহী এসব রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে গাড়িতে এনে চট্টগ্রামে শাহিন স্কুলের ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। এবারও সেভাবে নিয়ে যাওয়া হবে তাদের।