মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
১৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শরৎকাল, ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে পদার্থবিজ্ঞানে এ বছর নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় রোডমার্চ মাফ পাওয়ার সুযোগ নাই।-আমির খসরু ফরিদপুরে বিএনপির রোর্ড মার্চের পথসভা জনসমুদ্রে পরিনত ‌র‍্যাব ভিসানীতি নিয়ে ভাবছে না: ‌র‍্যাব দুই দিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ক্রিকেট বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিতে কতটা সোনা-রুপা রয়েছে, ওজন কত, মূল্য কত? শাটডাউন এড়ালেও নির্বাচনকে ঘিরে মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে আজ জানা যাবে পদার্থবিজ্ঞানে এ বছর কে বা কারা নোবেল পাচ্ছেন ক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে ঢাকার উদ্দেশে রাতে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ভাসানচরের পথে আরো সাড়ে ৩ হাজার রোহিঙ্গা

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২১
  • ১৩৬ Time View
ভাসানচরে যাচ্ছেন আরো সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা। গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে দুই দফায় ৫০ টি বাস রোহিঙ্গাদের নিয়ে চট্টগ্রামের পথে ছেড়ে যায়। যেখানে দুই হাজারের মতো  রোহিঙ্গা ছিল। আজ শুক্রবার আরো দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে কুতুপালং-১ ইস্ট, ২ ইস্ট, এবং ২ ওয়েস্ট ক্যাম্প থেকে একটি দল ভাসানচরে রওনা দেবে। তাদেরকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্যাম্প থেকে ট্রানজিট পয়েন্ট উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে নেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া- টেকনাফ থেকে ভাসানচরে এটি হবে তৃতীয় দফায় এবং বৃহৎ সংখ্যায় রোহিঙ্গা শরনার্থী স্থানান্তর। আজ শুক্রবার সোখান থেকে সমুদ্র পথে জাহাজে যোগে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে নতুন করে এই সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাদের। বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসু দ্দৌজা নয়ন জানান, স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী এরকম প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উখিয়া থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম নৌবাহিনীর জেটি ঘাট, সেখান থেকে পরে ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হবে। তবে আগ্রহী তিন হাজারের তালিকা করা হলেও শেষ পর্যন্ত এ সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।

কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় তৃতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে পথে তাদের নিয়ে রওনা দিয়েছে ১৬টি বাস। পথের নিরাপত্তায় বিকল্প হিসেবে আরো একটি খালি বাস এই বহরে সংযুক্ত ছিল। মালপত্র বহন করতে আরো কয়েকটি ট্রাক বহরে ছিল। সরেজমিন উপস্থিত থেকে এ চিত্র দেখা গেছে।
রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প ছেড়ে ভাসানচরের পথে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। তিনি জানান, বেলা ১২টার দিকে রোহিঙ্গাদের একটি দল বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করেছে।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে আগের মত এবারো তারা নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এ দফায় কতজনকে ভাসানচরে নেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, অন্তত দেড় হাজার রোহিঙ্গা তৃতীয় দফায় স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে আগ্রহী। বৃহস্পতিবার তাদেরই বাসে করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে সেখান থেকে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলোর সামনে ও পেছনে র‌্যাব ছাড়াও পুলিশ সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।

ভাসানচরে রওনা হওয়া মো. ইব্রাহিম নামে এক রোহিঙ্গার কাছে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার পরিবার সদস্যরা আগে সেখানে গিয়েছেন। সেখান থেকে তারা ভাসানচরের যে বর্ণনা দিয়েছেন তাতে আমারও যেতে ইচ্ছা করছে। এখানে ঘিঞ্জি, নোংরা, ঝুপড়ি ঘরের চেয়ে ওখানে উন্নত জীবন আছে। সেখানে কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে শুনেছি। তাই সেখানে চলে যাচ্ছি। গত ২৯ ডিসেম্বর এক হাজার ৮০৪ জনের দ্বিতীয় দলটিকে ভাসানচরে নেওয়ার ঠিক এক মাস পরে রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দলটি সেখানে যাচ্ছে। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা হাসিমুখে ভাসানচরে পৌঁছান।
স্থানীয়রা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য বুধবার রাতেই উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয় অন্তত ৫০টি বাস। স্থানীয় মুদির দোকানী আবুল কালাম বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ২০ মিনিটে প্রথম দফায় রোহিঙ্গাদের বহনকারী ১৭টি বাস তিনি ছেড়ে যেতে দেখেছেন।
উখিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শফিক আজাদ বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ১৭টি বাস রোহিঙ্গাদের নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে রওনা দিয়েছে। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে অন্তত আরো ৩০টি বাস অবস্থান করতে দেখা গেছে। ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস পর্যন্ত এলাকাজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনী। সেখানে সাধারণ মানুষের চলাচলেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ক্যাম্পের এক মাঝি জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছায় ক্যাম্প ইনচার্জের নিকট ভাসানচরে যেতে আগ্রহীদের তালিকা যারা জমা দিয়েছিল, তারা আজ ও আগামীকাল ভাসানচরে যাচ্ছে। তৃতীয় দফায় দুইদিনে রোহিঙ্গাদের বিশাল বহর স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাদের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। এই হিসাব ২০২০ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে সাত লাখ ৪১ হাজার ৮৪১ জন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে থেকে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102