ঢাকা ০৯:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে রাজধানী শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে, বাড়তে পারে দিনের তাপমাত্রা প্রাথমিকের ৬৫৩১ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করল হাইকোর্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলার সদস্যরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ভাঙা বাড়ি থেকে যে যার মতো জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছেন মূর্তি না ভেঙে শত্রুর শক্তির বিপরীতে পাল্টা চিন্তা, শক্তি ও হেজেমনি গড়ে তোলা উচিত: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আগামী জুনের মধ্যেই সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সপ্তাহজুড়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকা শীর্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভেঙে দেওয়ার কাজ এখনও চলছে

মহামারীর কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) হচ্ছে না

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১
  • ২২৫ Time View
প্রকাশকদের দাবি থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) হচ্ছে না।

সরকারের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী রোববার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারিতে শারীরিক উপস্থিতিতে বইমেলার আয়োজন সম্ভব নয়। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বা ভালোর দিকে গেলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব বইমেলা কখন হবে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আয়োজক বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে গত ৫ জানুয়ারি এক সভায় আবেদন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারিতে না পারলেও আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই যেন বইমেলার আয়োজন করা হয়।

প্রকাশকদের প্রস্তাবের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমরা আপাতত বইমেলা স্থগিত করেছি। পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বইমেলার আয়োজন স্থগিত রাখার জন্য গত মাসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি তাতে আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, খোলা আকাশের নিচে, বিশাল জায়গাজুড়ে যেভাবে প্রতিবছর হয়ে আসছে, এবারো তারা সেভাবেই একুশে বইমেলায় অংশ নিতে চান।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবার ‘ভার্চুয়ালি’ বইমেলা আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়েও প্রকাশকদের আপত্তি ছিল।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, আমরা ভার্চুয়ালি করব কিনা, সেটা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে অচিরেই জানাব আলোচনা সভা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান কীভাবে করা যায়।”

এ বিষয়ে কথা বলতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা স্থগিত করার বিষয়ে তারা এখনও চূড়ান্ত কিছু জানেন না।
আমরা বলেছিলাম, মধ্য ফেব্রুয়ারির দিকে বইমেলা শুরু করে মার্চ মাসের মধ্যে শেষ করতে। আমাদের প্রস্তাবটা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছিল। এখন বইমেলা হবে না, সেটা কি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েরই সিদ্ধান্ত কি না সেটা আমরা জানি না। বাংলা একাডেমি সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে সমিতিকে জানায়নি।

তবে বইমেলার আয়োজন যখনই করা হোক, পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে যেন প্রকাশকদের জানানো হয়, সে অনুরোধ বাংলা একাডেমিকে করা হয়েছে বলে জানান ফরিদ।

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেন।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। পরের বছর মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি।

১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা আর করা যায়নি। পরের বছর ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ‘অমর একুশে বইমেলা’র সূচনা হয়।

মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের এই বইমেলা এখন বাঙালির মননের মেলায় পরিণত হয়েছে।

প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি এ মেলার পর্দা উঠলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ভোট থাকায় গত বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলা একদিন পিছিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়।

ততদিনে চীন ছাড়িয়ে করোনাভাইরাস অন্যান্য দেশে পৌঁছাতে শুরু করলেও বাংলাদেশে এর প্রকোপ দেখা দেয়নি। ফলে ফেব্রুয়ারির শেষে নির্বিঘ্নেই মেলার সমাপ্তি ঘটে।

বাংলা একাডেমির তথ্য অনুযায়ী, গতবছর মেলায় নতুন বই আসে চার হাজার ৯১৯টি। সব মিলিয়ে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়।

মহামারীর কারণে গতবছর মুজিববর্ষের বিপুল আয়োজন কমিয়ে ফেলতে হয়েছে। প্রায় সব ধরনের উৎসব আয়োজনেই বিধিনিষেধের সীমা টেনে দেওয়া হয়েছে অতি ছেঁয়াচে এই ভাইরাসের কারণে।

Tag :

শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে রাজধানী শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা

মহামারীর কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) হচ্ছে না

Update Time : ০৪:৫৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১
প্রকাশকদের দাবি থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা (বইমেলা) হচ্ছে না।

সরকারের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী রোববার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারিতে শারীরিক উপস্থিতিতে বইমেলার আয়োজন সম্ভব নয়। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বা ভালোর দিকে গেলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব বইমেলা কখন হবে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আয়োজক বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে গত ৫ জানুয়ারি এক সভায় আবেদন জানানো হয়, ফেব্রুয়ারিতে না পারলেও আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই যেন বইমেলার আয়োজন করা হয়।

প্রকাশকদের প্রস্তাবের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমরা আপাতত বইমেলা স্থগিত করেছি। পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বইমেলার আয়োজন স্থগিত রাখার জন্য গত মাসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি তাতে আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, খোলা আকাশের নিচে, বিশাল জায়গাজুড়ে যেভাবে প্রতিবছর হয়ে আসছে, এবারো তারা সেভাবেই একুশে বইমেলায় অংশ নিতে চান।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবার ‘ভার্চুয়ালি’ বইমেলা আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়েও প্রকাশকদের আপত্তি ছিল।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, আমরা ভার্চুয়ালি করব কিনা, সেটা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে অচিরেই জানাব আলোচনা সভা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান কীভাবে করা যায়।”

এ বিষয়ে কথা বলতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা স্থগিত করার বিষয়ে তারা এখনও চূড়ান্ত কিছু জানেন না।
আমরা বলেছিলাম, মধ্য ফেব্রুয়ারির দিকে বইমেলা শুরু করে মার্চ মাসের মধ্যে শেষ করতে। আমাদের প্রস্তাবটা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছিল। এখন বইমেলা হবে না, সেটা কি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েরই সিদ্ধান্ত কি না সেটা আমরা জানি না। বাংলা একাডেমি সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে সমিতিকে জানায়নি।

তবে বইমেলার আয়োজন যখনই করা হোক, পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে যেন প্রকাশকদের জানানো হয়, সে অনুরোধ বাংলা একাডেমিকে করা হয়েছে বলে জানান ফরিদ।

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেন।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। পরের বছর মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি।

১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা আর করা যায়নি। পরের বছর ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ‘অমর একুশে বইমেলা’র সূচনা হয়।

মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের এই বইমেলা এখন বাঙালির মননের মেলায় পরিণত হয়েছে।

প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি এ মেলার পর্দা উঠলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ভোট থাকায় গত বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলা একদিন পিছিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়।

ততদিনে চীন ছাড়িয়ে করোনাভাইরাস অন্যান্য দেশে পৌঁছাতে শুরু করলেও বাংলাদেশে এর প্রকোপ দেখা দেয়নি। ফলে ফেব্রুয়ারির শেষে নির্বিঘ্নেই মেলার সমাপ্তি ঘটে।

বাংলা একাডেমির তথ্য অনুযায়ী, গতবছর মেলায় নতুন বই আসে চার হাজার ৯১৯টি। সব মিলিয়ে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়।

মহামারীর কারণে গতবছর মুজিববর্ষের বিপুল আয়োজন কমিয়ে ফেলতে হয়েছে। প্রায় সব ধরনের উৎসব আয়োজনেই বিধিনিষেধের সীমা টেনে দেওয়া হয়েছে অতি ছেঁয়াচে এই ভাইরাসের কারণে।