করোনার কারণে আগামী ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ধের মধ্যে আগামী শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে সংকটে পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতি বছর মাউশির সুপারিশের ভর্তি নীতিমালা জারি করে মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকস্তর সংযুক্ত হাইস্কুলে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে, দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে এবং নবম শ্রেণিতে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হয়। করোনার কারণে এ বছর ভর্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে মাউশি প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে সভা করে বিকল্প প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রণালয়।
করোনার কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা না লটারির মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে আজ বুধবার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সুপারিশের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করছে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দায়িত্বশীল কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। একটি সূত্র আভাস দিয়েছে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা হতে পারে। এ জন্য ভর্তি নীতিমালা সংশোধন করা হবে। তবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে নিজ উদ্যোগে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন আজকালের খবরকে বলেন, কেউ কেউ আগের মতো সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা, কেউ সব শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে আবার অনেকে একদিনের পরিবর্তে একাধিক দিনে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনের মতামত দিয়েছেন। প্রতিটির ইতিবাচক ও নেতিবাচক মতামত দিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের আগামী শিক্ষাবর্ষে লটারির মাধ্যমে সব শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনলাইনে শিক্ষার্থীর আবেদন করে। তা যাচাই-বাছাই করে লটারির জন্য নির্বাচন করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। একাধিক ধাপে লটারির আয়োজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। লটারির ফলাফল স্ব স্ব বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এ কার্যক্রমে যেন জনসমাগম না হয়, সেজন্য ভর্তি প্রক্রিয়ার সকল কার্যক্রমে অভিভাবকদের প্রবেশের সুযোগ থাকবে না। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও কয়েকজন অভিভাবক নিয়ে একটি ভর্তি কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।
সূত্র আরো জানায়, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ভর্তির জন্য আবেদনকারী অভিভাবকদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে পাঁচ থেকে সাতজনকে নির্বাচন করা হবে। তাদের অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে ভর্তি কমিটিতে যুক্ত করা হতে পারে। এছাড়া ভর্তি নীতিমালায় নতুন কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে আজ বুধবার দুপুরে ভার্চুয়ার সংবাদ সম্মেলন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
উল্লেখ্য বর্তমানে দেশে নতুন জাতীয়করণকৃতসহ ৬৮৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতে ৪২টি। সারা দেশে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ১৯ হাজার ৪২১টি। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৭৭৫টি এমপিওভুক্ত, বাকি দুই হাজার ৬৪৬টি নন-এমপিও।