বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
১৩ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শরৎকাল, ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মা-বাবার পাশেই ফুটবলের মহানায়কের চির ঘুম

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৭৩ Time View
সমাহিত করতে ম্যারাডেনার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বুয়েন্স আইরেসের উপকণ্ঠে অবস্থিত বেলা ভিস্তা সমাধিস্থলে।
কফিন আর্জেন্টিনার পতাকায় মোড়া। আর ঠিক মাথার ওপর বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিটি রাখা। এই জার্সি পরে আর্জেন্টিনার স্বপ্ন নিয়ে দৌড়েছিলেন একজন স্বপ্নবাজ। মৃত্যুর পর সেটা ম্যারাডোনার সঙ্গেই যাবে। এটাই তো স্বাভাবিক! বাবা-মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’।
নিজ জন্মস্থান বুয়েন্স আইরেসের উপকণ্ঠে অবস্থিত বেলা ভিস্তা সমাধিস্থলে সমাহিত করা হয়েছে ম্যারাডোনাকে। যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন ম্যারাডোনার বাবা দিয়েগো ম্যারাডোনা চিতোরো এবং মা দালমা সালভাদোরা ফ্রান্সো।
বিবিসি জানিয়েছে, বুয়েনস এইরেসে ম্যারাডোনার শেষকৃত্য ছিল পরিবার ও কাছের মানুষদের নিয়ে। তার শেষকৃত্যে অংশে নেয় ২০-২৫ জন কাছের বন্ধু ও আত্মীয়।
এর আগে বুধবার রাতে পুরো বুয়েন্স আয়ার্সের মানুষ পথে নেমে আসে। কাসা রোসাদার প্রেসিডেন্সিয়াল ভবনে কান্নাভেজা চোখে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান লাখো মানুষ।

শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের লাইন বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ এক কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। বিকেল চারটায় পূর্ব নির্ধারিত সময়ে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে ফটক বন্ধ করার চেষ্টা করলে ভক্তদের সঙ্গে পুলিশে সংঘর্ষ হয়। কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করার খবর এসেছে বলেও জানায় বিবিসি। আহত মানুষের রক্তাক্ত ছবি এসেছে গণমাধ্যমে।

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে বুধবার ৬০ বছর বয়সে মারা যান ফুটবল ইতিহাসের সেরা ফুটবলারদের একজন ও বর্ণময় এই চরিত্র।

স্থানীয় সময় রাত ১১টায় ময়নাতদন্ত শেষে শেষকৃত্যের জন্য প্রস্তুত করা ইতিহাসসেরা ফুটবলারের দেহকে। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন বুয়েন্স আয়ার্সের ডাক্তাররা।
ঘুমের মধ্যেই মারা গেছেন ম্যারাডোনা। ২০০০ সাল থেকেই হৃদরোগে ভুগছিলেন। আর পরশু হৃদযন্ত্রক্রীয়া বন্ধ হয়ে মারা যান ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক। ২৪ নভেম্বর ম্যারাডোনাকে রাতে বিদায় জানিয়ে এসেছিলেন তার এক আত্মীয়। সে রাতেও ম্যারাডোনা বেশ সুস্থ ছিলেন। এর পর ম্যারাডোনাকে আর দেখেনি কেউ।
পরশু রাতে ম্যারাডোনার স্ত্রী ক্লদিয়া ও দুই কন্যা দালমা ও জিয়ান্নিনা ছুটে আসেন। শেষবারের মতো ম্যারাডোনাকে দেখেছেন তারা। এ ছাড়া ম্যারাডোনাকে সম্মান জানাতে সমর্থক, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, সরকারি লোক ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে আর্জেন্টিনায়। সে দেশের লিগের খেলাও বন্ধ রয়েছে। আর্জেন্টিনার মানুষ এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না। ম্যারাডোনার জন্য বাড়িও ফিরছে না তারা। প্রেসিডেন্সিয়াল ভবনের সামনে মোম, ফুল, বিশাল ব্যানার নিয়ে হাজির হয়েছে তারা। কেউ কাঁদছে। আবার কেউ নিথর হয়ে বসে আসে। করোনা মহামারী তো হালের। আর্জেন্টিনার মানুষও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছে চিরকাল।
ম্যারাডোনা ছিলেন শত দুঃখের মাঝে বেঁচে থাকার প্রেরণা। তিনি কখনো হাসিয়েছেন, আবার কাঁদিয়েছেনও। খেলা ছেড়ে দিলেও বেঁচে ছিলেন। সেটাও অনেক বড় ছিল। পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে আর্জেন্টাইনরা।
More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102