মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধীদের জন্য এক রক্তাক্ত দিন আজ। বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়েছে দেশটির পুলিশ। এতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
রোববার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার বরাত দিয়ে এতথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম, চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদরাও একই তথ্য দিয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থা বলছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বলপ্রয়োগ করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এতে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি।
দেশটির রাজনীতিবিদ কিয়া মিন হিটেক জানিয়েছেন, দাউই শহরের বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে পুলিশ। এতে একজনের মৃত্যু হয়। এরপর আরও দুইজনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।
দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতর বিশ্বস্ত তথ্য পেয়েছে যে, পুলিশ ও সামরিক বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রাণঘাতী ও স্বল্প প্রাণঘাতী উপায়ে দমন করেছে যাতে অন্তত ১৮ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।’
ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় এবং দেওয়েই শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলে পড়ে পুলিশ-তাজা গুলি, রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস চালায়।
রবিবারও সেনাশাসন হটানো ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে জনতা। ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর সবচেয়ে বেশি রক্তক্ষয়ী হয়ে ওঠে এদিন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এক বিবৃতিতে বলে, ‘পুরোদিন দেশটি জুড়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়ে পড়ে পুলিশ ও সামরিক বাহিনী এবং প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করে। নির্ভরযোগ্য তথ্য থেকে জানা গেছে, অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি।’
নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষস্থানীয় নেতাদের। অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ চলমান রয়েছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রাজধানী নেপিডোতে সেনাশাসন বিরোধী বিক্ষোভকালে গুলিতে আহত হন ২০ বছরের এক তরুণী। তিনি নেপিডোর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
২০ ফেব্রুয়ারি একদিনে মারা যান দুজন। একটি শিপইয়ার্ডের কর্মীদের সেনাবিরোধী আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ গুলি চালালে ওই দুজন প্রাণ হারান।