ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা সমু চৌধুরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে সবার নজর এখন লন্ডনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে ১০৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত ইসরায়েলি হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তেহরান ইসরায়েলকে ‘ভয়াবহ পরিণামের’ হুঁশিয়ারি দিলেন খামেনি ইরানের রাডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো তৃতীয় ধাপে আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র যতক্ষণ প্রয়োজন ইরানে হামলা চলবে: নেতানিয়াহু

সময়মতো টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, চলমান টিকাদান কার্যক্রম নিয়েই একরকম হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

আগামী ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই দেশের সব শিক্ষক ও ১৮ বছরের ওপরের বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রবিবার এই ঘোষণার পরপরই নড়েচড়ে বসেন টিকার দায়িত্বে নিয়োজিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। চলমান টিকাদান কার্যক্রমের পাশাপাশি কিভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা যাবে, তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, টিকার জোগান অনেকটাই ঝুলে গেছে। এতে করে চলমান টিকাদান কার্যক্রম নিয়েই তাঁরা একরকম হিমশিম খাচ্ছেন। এর মধ্যে এখন কিভাবে মার্চ মাসের মধ্যেই সব শিক্ষক ও ১৮ ঊর্ধ্ব শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা যাবে, সেটা বড় চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আরো তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগের চুক্তি সম্প্রসারণ, নাকি নতুন করে চুক্তি হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানা গেছে। এর আগে বেক্সিমকোর মাধ্যমে সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনেছে সরকার, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত হাতে পাওয়া গেছে ৭০ লাখ ডোজ। চুক্তি অনুসারে বেক্সিমকো সেরাম থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা এনে সরকারকে দেওয়ার কথা রয়েছে।

টিকা নিয়ে সংকটের কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্যসচিব (সেবা বিভাগ) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘টিকা পাওয়া নিয়ে কিছুটা ক্রাইসিস তো আছেই। আমরা সেরাম থেকে আরো তিন কোটি ডোজ টিকা এনে দেওয়ার জন্য বেক্সিমকোকে বলেছি। তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু সেরামেও টিকার ক্রাইসিস আছে। ফলে বেক্সিমকো কখন কতটুকু টিকা আনতে পারবে, সেটা আগেভাগে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেক সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত দেশে এসেছে মোট ৯০ লাখ টিকা, যার মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টিকা দেওয়া শেষ। হাতে আছে ৬০ লাখ ডোজ। ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী মাসের ৭ তারিখ অর্থাৎ আর ৩৮ দিনের মাথায় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে হবে। তাই এপ্রিলের জন্য কমপক্ষে ৩০ লাখ ডোজ টিকা হাতে রাখতেই হবে। এ ছাড়া মার্চ মাসে দিনে দুই লাখ ডোজ করে হলেও সাধারণ মানুষের জন্য কমপক্ষে ৬০ লাখ ডোজ টিকা লাগবে। আর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে শিক্ষক ও ১৮ ঊর্ধ্ব শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ৬০ লাখ ডোজ টিকার দরকার হবে। ফলে চলতি মাসে টিকা লাগবে এক কোটি ২০ লাখ ডোজ। এপ্রিলের দ্বিতীয় ডোজের জন্য লাগবে ৩০ লাখ। আর ওই মাসে প্রথম ডোজ চালু রাখতে দরকার হবে ৬০ লাখ ডোজ। সব মিলিয়ে চলতি মাসেই হাতে টিকা থাকা দরকার কমপক্ষে দুই কোটি ১০ লাখ ডোজ। কিন্তু আছে মাত্র ৬০ লাখ ডোজ। চুক্তি অনুসারে সেরাম থেকে মার্চের ৫০ লাখ ডোজ ও ফেব্রুয়ারির বকেয়া ৩০ লাখ ডোজ এলেও বাকি এক কোটি ৩০ লাখ ডোজ কিভাবে জোগাড় হবে, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা  বলেন, ‘কোভ্যাক্সের টিকা কবে পাওয়া যাবে কিংবা সেরাম আবার কবে কত ডোজ টিকা দেবে এখন পর্যন্ত কিছুই জানি না। এর মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে হবে। সব মিলিয়ে বড় একটা চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

Tag :
জনপ্রিয়

ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে

সময়মতো টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, চলমান টিকাদান কার্যক্রম নিয়েই একরকম হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

Update Time : ০৭:২১:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ মার্চ ২০২১

আগামী ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই দেশের সব শিক্ষক ও ১৮ বছরের ওপরের বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রবিবার এই ঘোষণার পরপরই নড়েচড়ে বসেন টিকার দায়িত্বে নিয়োজিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। চলমান টিকাদান কার্যক্রমের পাশাপাশি কিভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা যাবে, তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, টিকার জোগান অনেকটাই ঝুলে গেছে। এতে করে চলমান টিকাদান কার্যক্রম নিয়েই তাঁরা একরকম হিমশিম খাচ্ছেন। এর মধ্যে এখন কিভাবে মার্চ মাসের মধ্যেই সব শিক্ষক ও ১৮ ঊর্ধ্ব শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা যাবে, সেটা বড় চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আরো তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগের চুক্তি সম্প্রসারণ, নাকি নতুন করে চুক্তি হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানা গেছে। এর আগে বেক্সিমকোর মাধ্যমে সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনেছে সরকার, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত হাতে পাওয়া গেছে ৭০ লাখ ডোজ। চুক্তি অনুসারে বেক্সিমকো সেরাম থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা এনে সরকারকে দেওয়ার কথা রয়েছে।

টিকা নিয়ে সংকটের কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্যসচিব (সেবা বিভাগ) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘টিকা পাওয়া নিয়ে কিছুটা ক্রাইসিস তো আছেই। আমরা সেরাম থেকে আরো তিন কোটি ডোজ টিকা এনে দেওয়ার জন্য বেক্সিমকোকে বলেছি। তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু সেরামেও টিকার ক্রাইসিস আছে। ফলে বেক্সিমকো কখন কতটুকু টিকা আনতে পারবে, সেটা আগেভাগে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেক সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত দেশে এসেছে মোট ৯০ লাখ টিকা, যার মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টিকা দেওয়া শেষ। হাতে আছে ৬০ লাখ ডোজ। ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী মাসের ৭ তারিখ অর্থাৎ আর ৩৮ দিনের মাথায় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে হবে। তাই এপ্রিলের জন্য কমপক্ষে ৩০ লাখ ডোজ টিকা হাতে রাখতেই হবে। এ ছাড়া মার্চ মাসে দিনে দুই লাখ ডোজ করে হলেও সাধারণ মানুষের জন্য কমপক্ষে ৬০ লাখ ডোজ টিকা লাগবে। আর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে শিক্ষক ও ১৮ ঊর্ধ্ব শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ৬০ লাখ ডোজ টিকার দরকার হবে। ফলে চলতি মাসে টিকা লাগবে এক কোটি ২০ লাখ ডোজ। এপ্রিলের দ্বিতীয় ডোজের জন্য লাগবে ৩০ লাখ। আর ওই মাসে প্রথম ডোজ চালু রাখতে দরকার হবে ৬০ লাখ ডোজ। সব মিলিয়ে চলতি মাসেই হাতে টিকা থাকা দরকার কমপক্ষে দুই কোটি ১০ লাখ ডোজ। কিন্তু আছে মাত্র ৬০ লাখ ডোজ। চুক্তি অনুসারে সেরাম থেকে মার্চের ৫০ লাখ ডোজ ও ফেব্রুয়ারির বকেয়া ৩০ লাখ ডোজ এলেও বাকি এক কোটি ৩০ লাখ ডোজ কিভাবে জোগাড় হবে, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা  বলেন, ‘কোভ্যাক্সের টিকা কবে পাওয়া যাবে কিংবা সেরাম আবার কবে কত ডোজ টিকা দেবে এখন পর্যন্ত কিছুই জানি না। এর মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে হবে। সব মিলিয়ে বড় একটা চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’