করোনাভাইরাস টিকা নিতে সুরক্ষা নামে ওয়েবসাইটে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছিল সরকার। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী ওই ওয়েবসাইটে নিবন্ধনে সাড়া মিলছে না। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চার লাখের মতো মানুষ নিবন্ধন করেছেন। এ অবস্থায় নিবন্ধনের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। প্রয়োজনে টিকাকেন্দ্রেই নিবন্ধন করতে পারবে মানুষ।
শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, নিবন্ধন না করলেও টিকাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে টিকা নিতে পারবেন এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে টিকাগ্রহীতাকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে। টিকাদানের আগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে টিকাগ্রহীতার সব তথ্য রেখে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মীরা তা ডাটাবেজে তুলে দেবেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অনেকের কাছে স্মার্টফোন নেই। আবার কারও কারও বাসায় ল্যাপটপ ও কম্পিউটার নেই। আবার অনেকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিবন্ধন করার মতো কারিগরি দক্ষতা নেই। এ কারণে অধিকাংশ মানুষ নিবন্ধন করতে পারছে না। এসব মানুষের কথা চিন্তা করেই টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ টিকাকেন্দ্রে আসা কাউকে টিকা ছাড়া ফেরত পাঠানো হবে না। এজন্যই কেন্দ্রগুলোতে নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
টিকা নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চেয়ারম্যান, মেয়র থেকে শুরু করে এমপি-মন্ত্রীসহ জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। প্রাপ্যতা অনুযায়ী সবাইকে টিকা নিতে উৎসাহিত করবেন, নিবন্ধন করাবেন।
টিকা নিয়ে কোনো ভীতি নেই উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, গত ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি যাদের টিকা দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই সুস্থ আছেন। সুতরাং টিকা নিয়ে যে ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন। সবার প্রতি আহ্বান থাকবে আপনারা নির্ভয়ে টিকা নিন, করোনামুক্ত থাকুন।
রোববার থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম একযোগে শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে টিকাদানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এ টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ এরইমধ্যে চলে এসেছে। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ২০ লাখ ডোজ।
বাংলাদেশে এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী গত ২৭ জানুয়ারি ৫২৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়। তাদের কারও মধ্যে টিকার গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না যাওয়ায় পরিকল্পনা মতো রোববার গণটিকাদান শুরু হচ্ছে।