দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নতুন করে কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। দ্বীপটিকে ‘প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন’ এলাকা ঘোষণা করে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে পরিবেশ অধিদফতর বলেছে, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন এবং পর্যটকদের অসচেতনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, পরিবেশ এবং প্রতিবেশ বিরোধী আচরণের কারণে সেন্টমার্টিনের বিরল প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পর্যটকদের অসচেতনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, পরিবেশ ও প্রতিবেশবিরোধী আচরণের কারণে সেন্টমার্টিনের বিরল প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত।
দ্বীপটিকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে পরিবেশ ও বিরল জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারসহ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ০৪ ধারার ক্ষমতাবলে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে অধিদপ্তর।
বিধিনিষেধগুলো হলো-
* সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা ও ভ্যানসহ কোনো ধরনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক বাহন দ্বীপের সৈকতে চালানো যাবে না।
* প্লাস্টিক বা কোনো ধরনের বর্জ্য দ্বীপের সৈকত, সমুদ্র এবং নাফ নদীতে ফেলা যাবে না।
* পশ্চিম দিকের সৈকতে কোনাপাড়ার পর দক্ষিণ দিকে এবং পূর্ব দিকের সৈকতে গলাচিপার পর দক্ষিণ দিকে যাওয়া যাবে না।
* দ্বীপের চারপাশে নৌকা ভ্রমণ করা যাবে না।
* জোয়ার-ভাটা এলাকায় পাথরের ওপর দিয়ে হাঁটা যাবে না।
* যেখানে সামুদ্রিক কাছিম ডিম পাড়ে, সেই স্থানে চলাফেরা, রাতে আলো জ্বালানো এবং ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে ছবি তোলা যাবে না।
* রাতের বেলা সৈকতে কোনো ধরনের আলো বা আগুন জ্বালানো যাবে না। সেইসঙ্গে আতশবাজি ও ফানুস উড়ানো যাবে না।
* সৈকতে হইচই, মাইক বাজানো, উচ্চস্বরে গান-বাজনা করা অথবা বার-বি-কিউ পার্টি করা যাবে না।
* স্পিডবোট, কান্ট্রি বোট, ট্রলার কিংবা অন্যান্য জলযানে করে ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে যাতায়াত কিংবা নোঙর করা যাবে না।
*সরকার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ছেঁড়াদিয়া দ্বীপ অধিগ্রহণ করেছে, সেখানে ভ্রমণ করা যাবে না।
* রাজকাঁকড়া, সামুদ্রিক ঘাস, প্রবাল, পাখি, তারা মাছ, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক কাছিম, সামুদ্রিক শৈবাল এবং কেয়া ফল সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।
*জাহাজ থেকে পাখিকে চিপস বা অন্য কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না।
*দ্বীপে সুপেয় পানির পরিমাণ সীমিত হয়ে যাওয়ায় পানির অপচয় করা যাবে না।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সর্বোপরি ভ্রমণকারীসহ সবাইকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রতিবেশের জন্য ক্ষতিকর- এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। বর্ণিত বিধিনিষেধ লঙ্ঘন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।