ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা সমু চৌধুরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে সবার নজর এখন লন্ডনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে ১০৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত ইসরায়েলি হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তেহরান ইসরায়েলকে ‘ভয়াবহ পরিণামের’ হুঁশিয়ারি দিলেন খামেনি ইরানের রাডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো তৃতীয় ধাপে আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র যতক্ষণ প্রয়োজন ইরানে হামলা চলবে: নেতানিয়াহু

সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের পরিবর্তন: টিকতে পারবেন তো সালমান?

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১৭:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ৩০২ Time View
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অভূতপূর্ব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সৌদি আরবের। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বা এমবিএসের ছিল মারাত্মক সুসময়! প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়েছিলেন এবং ইয়েমেন যুদ্ধে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে ব্যাপক স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। কিন্তু সৌদি যুবরাজের সেই ‘সুদিন’ হয়তো ফুরিয়ে এসেছে!

বাইডেন প্রশাসন সৌদি ইস্যুতে ট্রাম্পের নীতি থেকে সরে আসছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে চলতি সপ্তাহেই। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ইয়েন সাকি সম্প্রতি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পূনর্মূল্যায়ন করতে চান।

ট্রাম্প তার মেয়ের জামাই জ্যারেড কুশনারের মাধ্যমে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তবে বাইডেন সৌদি ইস্যুতে যুবরাজ নয়, সরাসরি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের পরিবর্তন
সৌদি আরব ইস্যুতে মার্কিন নীতি পরিবর্তনের অর্থই হলো, ট্রাম্প জমানায় যুবরাজ সালমানের যে সুদিন এসেছিল, তার অবসান। এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত ও নিরাপত্তা সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে সৌদিকে বাইডেন প্রশাসনের নতুন চিন্তাধারা মেনে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে স্বার্থত্যাগ করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি-নেতৃত্বাধীন জোটকে আর সমর্থন দেবে না। অবশ্য সৌদি আরব বলছে, তাতে সমস্যা নেই। তারাও এই যুদ্ধের সমাপ্তি চাচ্ছে।

মার্কিন প্রশাসনের দাবি, কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে। সৌদি সরকার ইতোমধ্যে সেটাও করে ফেলেছে।

সৌদিতে আটক মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছিলেন বাইডেন। গত সপ্তাহেই আলোচিত নারী অধিকার কর্মী লুজাইন আল-হাথলুলকে মুক্তি দিয়েছে দেশটি।

জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে অভিনন্দনবার্তা পাঠাতে কিছুটা সময় নিয়েছিলেন সৌদি শাসকরা। হোয়াইট হাউসের নতুন প্রশাসন নিয়ে অস্বস্তিতে পড়লেও তারা রাতারাতি যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে নতুন বন্ধু খুঁজতে যাবেন বলে মনে হয় না।

তারা জানেন, পারস্য উপসাগরে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের ৫ম নৌবহর সরে গেলেই ‘শত্রু’ ইরান সেই জায়গা দখল করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশে পরিণত হবে।

টিকতে পারবেন তো সালমান?
বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশের কাছেই এমবিএস একটি বিতর্কিত নাম। ২০১৮ সালে তার নির্দেশেই সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও যুবরাজ এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন।

তাছাড়া সৌদি আরবের ভেতরে যুবরাজ সালমান বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে তরুণদের কাছে। সামাজিক সংস্কারে যুবরাজের পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেন তারা।

৩৫ বছর বয়সী সালমানই সৌদি আরবের সর্বময় ক্ষমতার মালিক। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল গার্ড- সবই এখন তার নিয়ন্ত্রণে।

এই অবস্থানে অবশ্য একদিনেই আসেননি এমবিএস। অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে একে একে পথের সব কাঁটা দূর করেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের একজন, যাকে সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ শাসক মনে করা হতো। তিনি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ। ২০১৭ সালে ঠাণ্ডা মাথায় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন সালমান এবং এখনও বন্দি করে রেখেছেন।

বাইডেন প্রশাসন যে কৌশল নিয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেও ঝুঁকি রয়েছে। ৮০ বছর বয়সী সৌদি বাদশাহ সালমান খুবই অসুস্থ, দেশ পরিচালনার কাজ তিনি করতে পারেন না বললেই চলে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র পছন্দ না করলেও তাদের হয়তো আগামী কয়েক বছর বা দশক এমবিএসের সঙ্গেই কাজ করতে হতে পারে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Tag :
জনপ্রিয়

ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে

সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের পরিবর্তন: টিকতে পারবেন তো সালমান?

Update Time : ০৫:১৭:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অভূতপূর্ব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সৌদি আরবের। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বা এমবিএসের ছিল মারাত্মক সুসময়! প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়েছিলেন এবং ইয়েমেন যুদ্ধে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে ব্যাপক স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। কিন্তু সৌদি যুবরাজের সেই ‘সুদিন’ হয়তো ফুরিয়ে এসেছে!

বাইডেন প্রশাসন সৌদি ইস্যুতে ট্রাম্পের নীতি থেকে সরে আসছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে চলতি সপ্তাহেই। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ইয়েন সাকি সম্প্রতি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পূনর্মূল্যায়ন করতে চান।

ট্রাম্প তার মেয়ের জামাই জ্যারেড কুশনারের মাধ্যমে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তবে বাইডেন সৌদি ইস্যুতে যুবরাজ নয়, সরাসরি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

সৌদি-মার্কিন সম্পর্কের পরিবর্তন
সৌদি আরব ইস্যুতে মার্কিন নীতি পরিবর্তনের অর্থই হলো, ট্রাম্প জমানায় যুবরাজ সালমানের যে সুদিন এসেছিল, তার অবসান। এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত ও নিরাপত্তা সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে সৌদিকে বাইডেন প্রশাসনের নতুন চিন্তাধারা মেনে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে স্বার্থত্যাগ করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি-নেতৃত্বাধীন জোটকে আর সমর্থন দেবে না। অবশ্য সৌদি আরব বলছে, তাতে সমস্যা নেই। তারাও এই যুদ্ধের সমাপ্তি চাচ্ছে।

মার্কিন প্রশাসনের দাবি, কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে। সৌদি সরকার ইতোমধ্যে সেটাও করে ফেলেছে।

সৌদিতে আটক মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছিলেন বাইডেন। গত সপ্তাহেই আলোচিত নারী অধিকার কর্মী লুজাইন আল-হাথলুলকে মুক্তি দিয়েছে দেশটি।

জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে অভিনন্দনবার্তা পাঠাতে কিছুটা সময় নিয়েছিলেন সৌদি শাসকরা। হোয়াইট হাউসের নতুন প্রশাসন নিয়ে অস্বস্তিতে পড়লেও তারা রাতারাতি যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে নতুন বন্ধু খুঁজতে যাবেন বলে মনে হয় না।

তারা জানেন, পারস্য উপসাগরে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের ৫ম নৌবহর সরে গেলেই ‘শত্রু’ ইরান সেই জায়গা দখল করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশে পরিণত হবে।

টিকতে পারবেন তো সালমান?
বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশের কাছেই এমবিএস একটি বিতর্কিত নাম। ২০১৮ সালে তার নির্দেশেই সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও যুবরাজ এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন।

তাছাড়া সৌদি আরবের ভেতরে যুবরাজ সালমান বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে তরুণদের কাছে। সামাজিক সংস্কারে যুবরাজের পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেন তারা।

৩৫ বছর বয়সী সালমানই সৌদি আরবের সর্বময় ক্ষমতার মালিক। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল গার্ড- সবই এখন তার নিয়ন্ত্রণে।

এই অবস্থানে অবশ্য একদিনেই আসেননি এমবিএস। অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে একে একে পথের সব কাঁটা দূর করেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের একজন, যাকে সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ শাসক মনে করা হতো। তিনি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ। ২০১৭ সালে ঠাণ্ডা মাথায় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন সালমান এবং এখনও বন্দি করে রেখেছেন।

বাইডেন প্রশাসন যে কৌশল নিয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেও ঝুঁকি রয়েছে। ৮০ বছর বয়সী সৌদি বাদশাহ সালমান খুবই অসুস্থ, দেশ পরিচালনার কাজ তিনি করতে পারেন না বললেই চলে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র পছন্দ না করলেও তাদের হয়তো আগামী কয়েক বছর বা দশক এমবিএসের সঙ্গেই কাজ করতে হতে পারে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা