ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি। মঙ্গলবার তাকে দেখতে কলকাতায় ছুটে এসেছিলেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি।
সৌরভের সঙ্গে দেখা করে এবং মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবী শেঠি বলেন, সৌরভ পুরোপুরি ফিট। স্বাভাবিক জীবনযাপন তো বটেই, কিছুদিন পর ম্যারাথনও দৌড়াতে পারবেন সৌরভ। চাইলে ক্রিকেটও খেলতে পারবেন। বিমানও চালাতে পারবেন। কোনও সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, হার্ট অ্যাটাক হলেও সৌরভের হৃদযন্ত্রে কোনও সমস্যা নেই। শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কোনও সমস্যা হবে না। একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন মহারাজ।
দেবী শেঠি আরও বলেন, সৌরভ ধূমপান করেন না। অন্য কোনও বদভ্যাসও নেই। নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। তারপরও এই ধরনের হার্ট অ্যাটাক চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসকদের। সৌরভ সবই করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন কোনও শারীরিক পরীক্ষা করাননি। যে পরীক্ষা এই দেশের যে কোনও রাস্তার ল্যাবরেটরিতেও করানো যায়। ফলে আগে থেকে তার অসুখের কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। সৌরভ ওই পরীক্ষা করালে অন্তত ১৫ বছর আগে এই ঘটনা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা যেত।
দেবী শেঠি বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করা হয়েছে সৌরভের। উন্নত বিশ্বের যে কোনও দেশে ঠিক এই চিকিৎসাই করা হত। এর বাইরে কিছু হত না। এখন বাইপাস সার্জারির পরেও সংশ্লিষ্ট রোগী বাণিজ্যিক বিমান চালানোর লাইসেন্স পেতে পারেন। অর্থাৎ, নিজের তো বটেই, ৩০০-৪০০ যাত্রীর দায়িত্বও তিনি নিতে পারেন। সৌরভও কয়েকদিন পর ম্যারাথন দৌড়োতে পারবেন। চাইলে বিমানও চালাতে পারবেন। জটিল কিছু হয়নি। আপাতত অন্য সকলের মতোই ঘরে বসে কাজও করতে পারবেন সৌরভ।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বুধবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন সৌরভ। দু’সপ্তাহ পর মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা আবার আলোচনায় বসবেন। তখনই ঠিক করা হবে সৌরভের বাকি দু’টি ব্লকেজ সরাতে স্টেন্ট বসানোর প্রয়োজন হবে কি না। তার পর সেই অনুযায়ী অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে গত শনিবার বাড়িতে শরীরচর্চার সময় পড়ে যান সৌরভ। সঙ্গে সঙ্গে তাকে কলকাতার উডল্যান্ডস্ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানান যায়, তার হৃৎপিন্ডের তিনটি ধমনীতে ব্লকেজ রয়েছে। এরপর চিকিৎসকরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে ধমনীতে একটি স্টেন্ট বসান।
পশ্চিমবঙ্গের মহারাজ খ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলি ক্রিকেটার হিসেবে অবসর নিলেও ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে পারেননি। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের ক্রিকেটে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এরপর বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।