ঢাকা ০১:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে জনপ্রিয় অভিনেতা সমু চৌধুরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে সবার নজর এখন লন্ডনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে ১০৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত ইসরায়েলি হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তেহরান ইসরায়েলকে ‘ভয়াবহ পরিণামের’ হুঁশিয়ারি দিলেন খামেনি ইরানের রাডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো তৃতীয় ধাপে আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েলকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র যতক্ষণ প্রয়োজন ইরানে হামলা চলবে: নেতানিয়াহু

স্বাধীন ভারতে প্রথমবার নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের পথে

প্রেমিকের সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সাত সদস্যকে একসঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল মেয়েটি। ১৩ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের সেই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন শবনম আলী। সম্প্রতি আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কারণ স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে তিনিই হতে পারেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া প্রথম নারী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ৩৮ বছর বয়সী শবনম রামপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি সেই ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিলেন।

জানা যায়, একই এলাকার বাসিন্দা সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল শবনমের। সেলিমকে বিয়ে করবেন বলে জেদ ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া ছেলের সঙ্গে মাস্টার্স পাস মেয়ের বিয়ে দিতে চাননি শবনমের পরিবারের লোকজন। তাতেই প্রেমিকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, শবনম তার মা, বাবা, দুই ভাই, ভাবি, ১০ মাসের ভাইপো এবং এক আত্মীয়কে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করেন। এরপর গলা কেটে হত্যা করেন সবাইকে।

২০১০ সালে শবনম এবং সেলিম দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আমরোহার দায়রা আদালত। এরপর গত ১১ বছরে সাজা মওকুফের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতীয় রাষ্ট্রপতির কাছেও গিয়েছেন শবনম। নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান তিনি। কিন্তু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শবনমের সেই আবেদন খারিজ করে দেন ভারতের শীর্ষ আদালত।

অবশ্য বিচার বিভাগীয় কমিটির কাছে আবেদনটি পুনর্বিবেচনা এবং কিউরেটিভ পিটিশন দায়েরের উপায় এখনও শবনমের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় আইন বিশেষজ্ঞরা। আইনের সব দরজা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তারা। তবে শবনমের ফাঁসি কার্যকর করার দিনক্ষণ ঠিক করতে আমরোহা দায়রা আদালতে ইতোমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে।

প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো মথুরা কারাগারই ভারতের একমাত্র কারাগার, যেখানে নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাধীন ভারতে এখন পর্যন্ত কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তাই সেই ফাঁসির মঞ্চ এখনও অব্যবহৃতই রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্র মতে, মথুরা কারাগারে শবনমের ফাঁসির জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক এ প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মথুরার এক কারা কর্মকর্তা। বিহারের বক্সার কারাগার থেকে ফাঁসির দড়ি চাওয়া হয়েছে। জহ্লাদ গিয়ে ফাঁসিমঞ্চের সব পর্যবেক্ষণও করেছেন।

তবে এখন পর্যন্ত শবনমের মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Tag :

ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান; ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে

স্বাধীন ভারতে প্রথমবার নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের পথে

Update Time : ০৫:১৯:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

প্রেমিকের সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সাত সদস্যকে একসঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল মেয়েটি। ১৩ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের সেই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন শবনম আলী। সম্প্রতি আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কারণ স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে তিনিই হতে পারেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া প্রথম নারী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ৩৮ বছর বয়সী শবনম রামপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি সেই ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিলেন।

জানা যায়, একই এলাকার বাসিন্দা সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল শবনমের। সেলিমকে বিয়ে করবেন বলে জেদ ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া ছেলের সঙ্গে মাস্টার্স পাস মেয়ের বিয়ে দিতে চাননি শবনমের পরিবারের লোকজন। তাতেই প্রেমিকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, শবনম তার মা, বাবা, দুই ভাই, ভাবি, ১০ মাসের ভাইপো এবং এক আত্মীয়কে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করেন। এরপর গলা কেটে হত্যা করেন সবাইকে।

২০১০ সালে শবনম এবং সেলিম দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আমরোহার দায়রা আদালত। এরপর গত ১১ বছরে সাজা মওকুফের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতীয় রাষ্ট্রপতির কাছেও গিয়েছেন শবনম। নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান তিনি। কিন্তু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শবনমের সেই আবেদন খারিজ করে দেন ভারতের শীর্ষ আদালত।

অবশ্য বিচার বিভাগীয় কমিটির কাছে আবেদনটি পুনর্বিবেচনা এবং কিউরেটিভ পিটিশন দায়েরের উপায় এখনও শবনমের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় আইন বিশেষজ্ঞরা। আইনের সব দরজা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তারা। তবে শবনমের ফাঁসি কার্যকর করার দিনক্ষণ ঠিক করতে আমরোহা দায়রা আদালতে ইতোমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে।

প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো মথুরা কারাগারই ভারতের একমাত্র কারাগার, যেখানে নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাধীন ভারতে এখন পর্যন্ত কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তাই সেই ফাঁসির মঞ্চ এখনও অব্যবহৃতই রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্র মতে, মথুরা কারাগারে শবনমের ফাঁসির জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক এ প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মথুরার এক কারা কর্মকর্তা। বিহারের বক্সার কারাগার থেকে ফাঁসির দড়ি চাওয়া হয়েছে। জহ্লাদ গিয়ে ফাঁসিমঞ্চের সব পর্যবেক্ষণও করেছেন।

তবে এখন পর্যন্ত শবনমের মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা