ঢাকা ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ আজকের নামাজের সময়সূচি ১৫ জানুয়ারি আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আগামী সপ্তাহেই দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে একটি শৈত্যপ্রবাহ যুক্তরাজ্যের ইকোনোমিক সেক্রেটারির পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকে বসবে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতি কেজি এলপি গ্যাসের দাম ৩৭ পয়সা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় নির্বাচনের আহ্বান বিএনপির ফরিদপুরের সমাজসেবী আশরাফুল ইসলাম বুলুর ইন্তেকাল আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছেন পুলিশের ৪০তম অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা

স্বাধীন ভারতে প্রথমবার নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের পথে

প্রেমিকের সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সাত সদস্যকে একসঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল মেয়েটি। ১৩ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের সেই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন শবনম আলী। সম্প্রতি আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কারণ স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে তিনিই হতে পারেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া প্রথম নারী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ৩৮ বছর বয়সী শবনম রামপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি সেই ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিলেন।

জানা যায়, একই এলাকার বাসিন্দা সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল শবনমের। সেলিমকে বিয়ে করবেন বলে জেদ ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া ছেলের সঙ্গে মাস্টার্স পাস মেয়ের বিয়ে দিতে চাননি শবনমের পরিবারের লোকজন। তাতেই প্রেমিকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, শবনম তার মা, বাবা, দুই ভাই, ভাবি, ১০ মাসের ভাইপো এবং এক আত্মীয়কে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করেন। এরপর গলা কেটে হত্যা করেন সবাইকে।

২০১০ সালে শবনম এবং সেলিম দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আমরোহার দায়রা আদালত। এরপর গত ১১ বছরে সাজা মওকুফের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতীয় রাষ্ট্রপতির কাছেও গিয়েছেন শবনম। নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান তিনি। কিন্তু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শবনমের সেই আবেদন খারিজ করে দেন ভারতের শীর্ষ আদালত।

অবশ্য বিচার বিভাগীয় কমিটির কাছে আবেদনটি পুনর্বিবেচনা এবং কিউরেটিভ পিটিশন দায়েরের উপায় এখনও শবনমের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় আইন বিশেষজ্ঞরা। আইনের সব দরজা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তারা। তবে শবনমের ফাঁসি কার্যকর করার দিনক্ষণ ঠিক করতে আমরোহা দায়রা আদালতে ইতোমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে।

প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো মথুরা কারাগারই ভারতের একমাত্র কারাগার, যেখানে নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাধীন ভারতে এখন পর্যন্ত কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তাই সেই ফাঁসির মঞ্চ এখনও অব্যবহৃতই রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্র মতে, মথুরা কারাগারে শবনমের ফাঁসির জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক এ প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মথুরার এক কারা কর্মকর্তা। বিহারের বক্সার কারাগার থেকে ফাঁসির দড়ি চাওয়া হয়েছে। জহ্লাদ গিয়ে ফাঁসিমঞ্চের সব পর্যবেক্ষণও করেছেন।

তবে এখন পর্যন্ত শবনমের মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Tag :
জনপ্রিয়

এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

স্বাধীন ভারতে প্রথমবার নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের পথে

Update Time : ০৫:১৯:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

প্রেমিকের সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সাত সদস্যকে একসঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল মেয়েটি। ১৩ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের সেই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন শবনম আলী। সম্প্রতি আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কারণ স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে তিনিই হতে পারেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া প্রথম নারী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ৩৮ বছর বয়সী শবনম রামপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি সেই ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিলেন।

জানা যায়, একই এলাকার বাসিন্দা সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল শবনমের। সেলিমকে বিয়ে করবেন বলে জেদ ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া ছেলের সঙ্গে মাস্টার্স পাস মেয়ের বিয়ে দিতে চাননি শবনমের পরিবারের লোকজন। তাতেই প্রেমিকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, শবনম তার মা, বাবা, দুই ভাই, ভাবি, ১০ মাসের ভাইপো এবং এক আত্মীয়কে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করেন। এরপর গলা কেটে হত্যা করেন সবাইকে।

২০১০ সালে শবনম এবং সেলিম দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আমরোহার দায়রা আদালত। এরপর গত ১১ বছরে সাজা মওকুফের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতীয় রাষ্ট্রপতির কাছেও গিয়েছেন শবনম। নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান তিনি। কিন্তু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শবনমের সেই আবেদন খারিজ করে দেন ভারতের শীর্ষ আদালত।

অবশ্য বিচার বিভাগীয় কমিটির কাছে আবেদনটি পুনর্বিবেচনা এবং কিউরেটিভ পিটিশন দায়েরের উপায় এখনও শবনমের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় আইন বিশেষজ্ঞরা। আইনের সব দরজা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তারা। তবে শবনমের ফাঁসি কার্যকর করার দিনক্ষণ ঠিক করতে আমরোহা দায়রা আদালতে ইতোমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে।

প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো মথুরা কারাগারই ভারতের একমাত্র কারাগার, যেখানে নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাধীন ভারতে এখন পর্যন্ত কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড হয়নি। তাই সেই ফাঁসির মঞ্চ এখনও অব্যবহৃতই রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্র মতে, মথুরা কারাগারে শবনমের ফাঁসির জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক এ প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মথুরার এক কারা কর্মকর্তা। বিহারের বক্সার কারাগার থেকে ফাঁসির দড়ি চাওয়া হয়েছে। জহ্লাদ গিয়ে ফাঁসিমঞ্চের সব পর্যবেক্ষণও করেছেন।

তবে এখন পর্যন্ত শবনমের মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা