ঢাকা ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ফরিদপুরে চলাচলের অযোগ্য সড়ক মেরামত করলো যুবদল কর্মীরা আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় কোনো জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই ইসরাইলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফায় ফের রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ, আহত ১০ বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে শিশুদের সুন্দর বিকাশের জন্য গুরুত্ব প্রদান করা আমাদের সবার দায়িত্ব রাস্তা ঘেষে বেকু দিয়ে মাটি কাটায় ধসে যাচ্ছে ফরিদপুর লেকপাড়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আজকের নামাজের সময়সূচি ৭ অক্টোবর আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা তিন পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে

স্বেচ্ছায় তৃতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৫৬:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১
  • ২১৮ Time View

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় তৃতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে তাদের নিয়ে রওনা দিয়েছে ১৬টি বাস। পথের নিরাপত্তায় বিকল্প হিসেবে আরও একটি খালি বাস এই বহরে সংযুক্ত আছে। মালপত্র বহন করছে আরও কয়েকটি ট্রাক।তবে বাসগুলোতে ঠিক কতজন রোহিঙ্গা উঠেছেন তা জানা যায় নি।

একটি সূত্রের দাবি, সপরিবারে আনুমানিক ৫শ’র বেশি রোহিঙ্গা উঠেছেন বাসগুলোতে। তবে আজ আরও বাস যাবে এবং মোট সংখ্যা এ প্রক্রিয়া শেষে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।

রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প ছেড়ে ভাসানচরের পথে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে রোহিঙ্গাদের একটি দল বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করেছে। সেখানে কতজন রোহিঙ্গা আছে সেটা এখন বলা মুশকিল। দিন শেষে মোট কতজন যাচ্ছেন সেটা বলা যাবে। ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের যারা যেতে ইচ্ছুক তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে বাসগুলো চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানিজট ক্যাম্পে পৌঁছাবে। সেখানে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার তাদের জাহাজে তোলা হবে। ২৯ জানুয়ারি তারা ভাসানচরে পৌঁছাবেন।

বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়া ডিগ্রী কলেজের সামনে  ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আসা নুরুল ইসলাম নামে এক রোহিঙ্গা জানান, উখিয়া কুতুপালংয়ে প্রায় সময় সংর্ঘষে লেগে থাকে। তাই জীবনের নিরাপত্তা ও উন্নত জীবনের আশায় ভাসানচরে যাচ্ছি। এর আগে পরিবারের ২৫ জন স্বজন প্রথম ধাপে গেছেন। তারা সবাই সেখানে খুব ভাল আছেন। খুব আনন্দ লাগছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হবে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার পর বাসে করে রোহিঙ্গাদের একটি দল ভাসানচরে উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

ডিসেম্বরের ৪ এবং ২৯ তারিখে দুই ধাপে প্রায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে দ্বীপটিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ভাসানচরে পৌঁছানো রোহিঙ্গা বসতিদের মধ্যে ৮০১ জন পুরুষ, ৯৮৭ জন নারী এবং ১৬৫৮ জন শিশু। তার আগে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচর নিয়ে যায় সরকার।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

Tag :

ফরিদপুরে চলাচলের অযোগ্য সড়ক মেরামত করলো যুবদল কর্মীরা

স্বেচ্ছায় তৃতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল

Update Time : ১০:৫৬:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় তৃতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে তাদের নিয়ে রওনা দিয়েছে ১৬টি বাস। পথের নিরাপত্তায় বিকল্প হিসেবে আরও একটি খালি বাস এই বহরে সংযুক্ত আছে। মালপত্র বহন করছে আরও কয়েকটি ট্রাক।তবে বাসগুলোতে ঠিক কতজন রোহিঙ্গা উঠেছেন তা জানা যায় নি।

একটি সূত্রের দাবি, সপরিবারে আনুমানিক ৫শ’র বেশি রোহিঙ্গা উঠেছেন বাসগুলোতে। তবে আজ আরও বাস যাবে এবং মোট সংখ্যা এ প্রক্রিয়া শেষে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।

রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প ছেড়ে ভাসানচরের পথে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে রোহিঙ্গাদের একটি দল বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করেছে। সেখানে কতজন রোহিঙ্গা আছে সেটা এখন বলা মুশকিল। দিন শেষে মোট কতজন যাচ্ছেন সেটা বলা যাবে। ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের যারা যেতে ইচ্ছুক তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে বাসগুলো চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানিজট ক্যাম্পে পৌঁছাবে। সেখানে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার তাদের জাহাজে তোলা হবে। ২৯ জানুয়ারি তারা ভাসানচরে পৌঁছাবেন।

বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়া ডিগ্রী কলেজের সামনে  ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আসা নুরুল ইসলাম নামে এক রোহিঙ্গা জানান, উখিয়া কুতুপালংয়ে প্রায় সময় সংর্ঘষে লেগে থাকে। তাই জীবনের নিরাপত্তা ও উন্নত জীবনের আশায় ভাসানচরে যাচ্ছি। এর আগে পরিবারের ২৫ জন স্বজন প্রথম ধাপে গেছেন। তারা সবাই সেখানে খুব ভাল আছেন। খুব আনন্দ লাগছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হবে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার পর বাসে করে রোহিঙ্গাদের একটি দল ভাসানচরে উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

ডিসেম্বরের ৪ এবং ২৯ তারিখে দুই ধাপে প্রায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে দ্বীপটিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ভাসানচরে পৌঁছানো রোহিঙ্গা বসতিদের মধ্যে ৮০১ জন পুরুষ, ৯৮৭ জন নারী এবং ১৬৫৮ জন শিশু। তার আগে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচর নিয়ে যায় সরকার।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।