উত্তর ইসরায়েলে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ রকেট হামলায় চার বিদেশি কর্মী এবং তিনজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এই হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি চিকিৎসকরা বলেছেন, লেবানন আক্রমণ করার পর থেকে ইসরায়েলে সবচেয়ে মারাত্মক আন্তঃসীমান্ত হামলা ছিল এটি।
লেবানন থেকে প্রজেক্টাইলগুলো ইসরায়েলের উত্তরের শহর মেতুলায় একটি কৃষি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে চার থাই শ্রমিক এবং একজন ইসরায়েলি কৃষক নিহত হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লেবানন থেকে প্রায় ২৫টি রকেট হামলার প্রতিবেদন করেছে। রকেটগুলো উত্তর ইসরায়েলের বন্দর শহর হাইফার উপকণ্ঠে একটি জলপাইগাছে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের প্রধান জরুরি চিকিৎসা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম বলেছেন, ওই হামলায় একজন ৩০ বছর বয়সি পুরুষ ও ৬০ বছর বয়সি এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরো দুইজন আহত হয়েছেন।
হিজবুল্লাহ এবং হামাস উভয়কে ইসরায়েলের আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরান সমর্থন করে। হিজবুল্লাহ তাৎক্ষণিকভাবে বৃহস্পতিবারের রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে ৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে হাজার হাজার রকেট, ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। গাজায় ভয়ংকর ইসরায়েলি প্রতিশোধমূলক হামলার জবাবে এই হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহ।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসা শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, নিহত চার থাই ছাড়াও রকেটের আগুনে আরো একজন থাই কৃষিকর্মী আহত হয়েছেন। ক্রমাগত সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বেসামরিক নাগরিকদের কথা চিন্তা করে শান্তির পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান মারিস।
একটি ইসরায়েলি সংস্থা, যেটি বিদেশি কর্মীদের জন্য কাজ করে তারা বলেছে, ‘কর্তৃপক্ষ তাদের যথাযথ সুরক্ষা ছাড়াই সীমান্তে কাজ করার অনুমতি দিয়ে তাদের বিপদে ফেলেছে।
’ইসরায়েলের সীমান্তের কাছাকাছি কৃষি অঞ্চলগুলো বন্ধ সামরিক অঞ্চল, যেখানে শুধু সরকারি অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়।
এদিকে ইসরায়েল লেবাননজুড়ে বিমান হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহ জঙ্গিদের লক্ষ্য এ হামলা চালানো হয়। বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ২৪ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে।
উত্তর গাজায়ও ইসরায়েলি বাহিনী সর্বশেষ একটি হাসপাতালে আঘাত হেনেছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুসাম আবু সাফিয়া বলেন, হামলার ফলে আগুন লেগে গেছে। হামলায় ডায়ালিসিস ইউনিটটি প্রভাবিত হয়েছে, পানির ট্যাংক ধ্বংসসহ সার্জারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন নেভানোর চেষ্টারত চার চিকিৎসক আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হাসপাতালে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। হামাস জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে গত সপ্তাহে আক্রমণ করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করেছে এবং গাজায় চিকিৎসা সুবিধা রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র : এপি