রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন
৯ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শরৎকাল, ৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ

হুমায়ুন ফরীদির চলে যাওয়ার ৯ বছর, পাচ্ছেন মরণোত্তর একুশে পদক

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ৩০৫ Time View

কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ আক্ষেপ করে প্রয়াত নন্দিত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আচ্ছা, এই মানুষটি কী অভিনয়কলায় একটি একুশে পদক পেতে পারেন না! এই সম্মান কী তার প্রাপ্য না?’ বেঁচে থাকতে ফরীদি তা পাননি। তবে মরণোত্তর একুশে পদক পাচ্ছেন তিনি। অভিনয় অঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই স্বীকৃতি দিলো সরকার। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

বরেণ্য অভিনেতা ও অভিনয় কারিগর হুমায়ুন ফরীদির নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। ২০১২ সালের এ দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ফরীদি চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও টেলিভিশনে সমান জনপ্রিয় ছিলেন। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ নানা আয়োজন করেছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।

ফাগুনের রঙে বিষাদ ছড়িয়ে ছয় বছর আগে চিরতরে চলে গেছেন তিনি। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তার প্রয়াণ হয়। জীবনের রঙ্গমঞ্চ থেকে ৬০ বছর বয়সে গুণী এই মানুষের না ফেরার দেশে চলে যাওয়া কাঁদিয়েছে সবাইকেই। রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন হুমায়ুন ফরীদি।
শুধু অভিনয় দিয়েই মানুষকে বিমোহিত করেছিলেন ডাকসাইটে এই অভিনেতা। তাকে বলা হয় অভিনেতাদের অভিনেতা, একজন আদর্শ শিল্পী। তার অভিব্যক্তি, অট্টহাসি, ব্যক্তিত্বের ভক্ত কে না ছিলেন! অনেকের কাছে তার ব্যক্তিজীবনের গল্পও বেশ অনুপ্রেরণার।

১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় হুমায়ুন ফরীদির জন্ম। বাবা এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। সত্তর দশকের মধ্যভাগে মঞ্চ আর টিভি নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এ অভিনেতার যাত্রা শুরু। পরে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চে সমান দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে দেশ-বিদেশের বাংলাভাষী অসংখ্য ভক্তের মনে স্থায়ী জায়গা করে নেন তিনি। নায়ক কিংবা খলনায়ক- সব চরিত্রেই সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি।

আশির দশকের শুরুর দিকে মিনুকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন ফরীদি। ২০০৮ সালে সেই সম্পর্কেরও বিচ্ছেদ ঘটে।

স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক জীবন শুরু করেন হুমায়ুন ফরীদি। সেখানেই তার অভিনয় প্রতিভার বিকাশ ঘটে। সেলিম আল দীনের কাছে নাট্যতত্ত্বে দীক্ষা নেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই সদস্যপদ পান ঢাকা থিয়েটারের। এই নাট্যদল থেকেই ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার অভিনয়ের রঙগুলো। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নাট্য সম্পাদক।

সেলিম আল দ্বীনের ‘শকুন্তলা’ নাটকের তক্ষক চরিত্রের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হয় তার। ১৯৮২ সালে তিনি ‘নীল নকশার সন্ধানে’ নাটকে অভিনয় করেন। এটি ছিল তার প্রথম টেলিভিশন নাটক।

এরপর অভিনয় করেছেন ‘ভাঙ্গনের শব্দ শুনি’, ‘সংশপ্তক’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’ এবং ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’,  ‘তিনি একজন’, ‘চন্দ্রগ্রস্ত’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘শৃঙ্খল’, ‘প্রিয়জন নিবাস’র মতো দর্শকপ্রিয় নাটকে।

নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। সেলিম আল দীন রচিত ‘কেরামত মঙ্গল’, ‘কিত্তনখোলা’, ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’, ‘হাত হদাই’-এর মতো ধ্রুপদি নাটকে অভিনয় করে দর্শকনন্দিত হন তিনি। এ ছাড়া টিভি নাটকে ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এ প্রথম অভিনয় করেন হুমায়ুন ফরীদি। তবে ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিক নাটকে ‘কান কাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে নিয়ে যান অন্য উচ্চতায়।

হুমায়ুন ফরীদির চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় ‘হুলিয়া’য়। এক দশকের বেশি সময় ধরে রুপালি পর্দায় অভিনয় করেন। অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102